মাধবপুর, (হবিগঞ্জ) ২২ জুন : মাধবপুরে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের ৫০টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। গ্রামের আঞ্চলিকসড়ক ও কাচা রাস্তা বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। ইতিমধ্যে প্রায় ১শটি পরিবার বন্যা আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি উঠায় ৪৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হয়েছে। বন্যার কারনে শত শত পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। বন্যা কবলিত এলাকার লোকজন গবাদি পশু, ধান, চাল ও অন্যান্য গৃহস্থালি জিনিসপত্র বাড়ি থেকে সরিয়ে ফেলছে। তবে নৌকা সংকটের কারনে মালামাল সরানো কঠিন হয়ে পড়েছে। ঘরের মধ্যে মাঁচা বেধে জান মাল নিয়ে প্রাণ পন চেষ্টা করছে। বন্যার কারনে কৃষি জমি সম্পূর্ন তলিয়ে গেছে।
উপজেলার বাঘাসুরা, ছাতিয়াইন, নোয়াপাড়া, বুল্লা, আদাঐর ও আন্দিউড়া ইউনিয়নের ভাটি এলাকার ৫০টি গ্রাম বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। স্থানীয়দের দাবি এবারের বন্যায় বিগত বছরের সব রেকর্ড ভেঙ্গেছে। সোনাই নদীর খুটানিয়া দিঘীর পাড় সুলতানপুর এলাকার একাধিক স্থানে নদীর পাড় পানির নিচে তলিয়ে গেছে। অনেক বাড়ি ঘরে বসত ভিটায় পানি উঠে গেছে। নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য উপজেলা প্রশাসন ঘোষিত আশ্রয় কেন্দ্রে ১শটি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। বুল্লা ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান জানান, বুল্লা ইউনিয়নের প্রায় সব কয়টি গ্রামে বাড়ি ঘরে পানি প্রবেশ করেছে। গ্রামের সব আঞ্চলিক রাস্তা পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
আন্দিউড়া ইউপি চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান জানান, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সাধারন জনগনকে নিয়ে দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা করে জনগনকে সাহসের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য বলা হয়েছে। মাধবপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আল মামুন হাসান জানান, ১৮শ হেক্টর বোনা আমন, ১৭শ হেক্টর রোপা আউস এবং ২শ হেক্টর সবজি পানিতে তলিয়ে সম্পূর্ন বিনষ্ট হয়ে গেছে।
মাধবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ মঈনুল ইসলাম মঈন জানান, পানি দিন দিন বাড়ছেই। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় ১১টি ইউনিয়নে ২৭টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। চিকিৎসা দিতে মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। ৫টি আশ্রয় কেন্দ্রে ১শটি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে।