ঢাকা, ১৮ মার্চ : ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তারের পর জামিনে কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি। শনিবার (১৮ মার্চ) সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটের দিকে তিনি গাজীপুর জেলা কারাগার থেকে মুক্তি পান।
গত শুক্রবার ভোরে মাহিয়া মাহির স্বামী গাজীপুরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও আওয়ামী লীগ নেতা রকিব সরকারের একটি গাড়ির শো-রুমে হামলা ও ভাঙচুর চালায় দুর্বৃত্তরা। নগরীর ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজের পূর্বপাশে সনিরাজ কার প্যালেস নামে ওই শো-রুমে হামলার ঘটনা ঘটে। এরপর ফেসবুক লাইভে আসেন মাহি। সেখানে তিনি অভিযোগ করেন, গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) কমিশনার মোল্লা নজরুল ইসলাম ও কয়েকজন কর্মকর্তা একজনের কাছ থেকে দেড় কোটি টাকা ঘুষ নিয়ে তাঁদের শোরুমের জায়গাটি অন্য লোকের দখলের দেওয়ার চেষ্টা করছেন।
এই লাইভের পর শুক্রবারই মাহি ও তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন জিএমপির বাসন থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মহম্মদ রোকন মিয়া। মামলায় মাহির বিরুদ্ধে ফেসবুক লাইভে মানহানিকর তথ্য প্রচার করে আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটানোর অভিযোগ আনা হয়েছে।
শনিবার দুপুর ১২টা নাগাদ মাহিয়া মাহি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামলে তাঁকে গ্রেপ্তার করে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ। পবিত্র ওমরাহ পালন শেষে দেশে ফেরার পরই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। দুপুরেই তাঁকে গাজীপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৫ এ হাজির করা হয়। পরে শুনানি শেষে বিচারক কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পরে তাঁর অন্তঃসত্ত্বার বিষয়টি আদালত বিবেচনায় নিয়ে জামিন দিয়েছে। মাহিয়া মাহির আইনজীবী অ্যাডভোকেট আনোয়ার সাদত জানান, মাহিকে বিকেল ৫টায় জামিন দেয় আদালত। গাজীপুর জেলা কারাগারের জেল সুপার মো. আনোয়ারুল করিম বলেন, মাহিয়া মাহির জামিনের কাগজপত্র সন্ধ্যায় কারাগারে পৌঁছায়। পরে তা যাচাই-বাছাই করে সত্যতা পাওয়া গেলে সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটের দিকে তাকে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়। পরে কারাগারের গেটে উপস্থিত মানুষদের ভিড় ঠেলে সন্ধ্যা ৭টা ৫০ মিনিটের দিকে গাড়িতে করে মাহিয়া মাহি কারাগার এলাকা ত্যাগ করেন।
প্রসঙ্গত, কয়েক মাস আগে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ (গোমস্তাপুর-নাচোল-ভোলাহাট) আসনের উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা নিয়ে ব্যাপক আলোচনায় আসেন মাহি। এলাকায় গণসংযোগও করেন তিনি। তবে শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের মনোনয়ন পাননি এই নায়িকা। মাহিয়া মাহির স্বামী রকিব সরকার আওয়ামী লীগের আগের কমিটির ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটির সহ-সম্পাদক ছিলেন। এছাড়া ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গেও তিনি সক্রিয়ভাবে জড়িত।