ঢাকা, ২১ জুলাই : টেলিগ্রাম গ্রুপ পমপমের কাছে সাবেক প্রেমিকাদের একান্ত ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও ফাঁসকারী ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। খবর এডিশনাল আইজি সিআইডি ফেসবুক পেইজ সূত্রের।
দেশ যত ডিজিটাল হচ্ছে, চারিদিকে বাড়ছে নিত্য-নতুন অপরাধ। এসব অপরাধ দমনে সিআইডির সাইবার পুলিশ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৯ জুলাই সাভার, মিরপুর, উত্তরা এবং কুমিল্লার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ফাইজুল মল্লিক (২১), আশরাফুল প্রত্যয় (১৯), সাফিন রহমান (১৮) ও তামিম রহমান (২১) নামে ৪ তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডির সাইবার পুলিশের একটি চৌকস দল। প্রাথমিক অনুসন্ধান ও জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় তারা তাদের সাবেক প্রেমিকাদের হয়রানি করতে আপত্তিকর কন্টেন্ট পমপম গ্রুপের কাছে ভাইরাল করার জন্য দিয়েছিল।
গ্রেফতার তরুণদের অপরাধ সম্পর্কিত চারটি ঘটনা সচেতনতার জন্য উল্লেখ করা হলো:
প্রথম ঘটনাটি রাজধানীর এক বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর। কয়েক বছরের পুরনো প্রেম ভেঙ্গে গেলে নতুন বন্ধুদের সঙ্গে মিশতে শুরু করে মেয়েটি। এটি জেদের জন্ম দেয় এইচএসসি পরীক্ষার্থী সাবেক প্রেমিক সাফিন রহমানের মনে। ফলে মেয়েটিকে শায়েস্তা করার ছক আঁকতে থাকে সে। বেছে নেয় টেলিগ্রামের ভয়ানক অন্ধকার পথ। মেয়েটির প্রায় ২ শতাধিক একান্ত ব্যক্তিগত ছবি-ভিডিও, যেগুলো প্রেম-পর্বে নানা কৌশলে সে হস্তগত করেছিল, সেগুলো তুলে দেয় টেলিগ্রাম গ্রুপ পমপমের কাছে। এরপর মেয়েটির জীবনে নেমে আসে অন্ধকার। মেয়েটির নাম-পরিচয়সহ টেলিগ্রামে ভাইরাল করে দেয় চক্রটি। মেগা ফাইলের মাধ্যমে বিক্রি করতে থাকে মেয়েটির কন্টেন্ট। চেনা-অচেনা মানুষের চাপে, কটু কথায় বেশ কয়েকবার আত্মহত্যারও চেষ্টা করে মেয়েটি।
দ্বিতীয় ঘটনাটি এক এইচএসসি পরীক্ষার্থীর। প্রেমের ফাঁদে ফেলে যাকে মিরপুরের এক রেস্তোরায় নিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করে কুমিল্লার তামীম রহমান। সে দৃশ্য আবার মোবাইল ফোনে ধারণ করে রাখে। এরপর শুরু হয় ব্ল্যাক মেইলিং। টাকা এবং একান্ত ছবি দিতে দিতে ক্লান্ত মেয়েটি শেষে আত্মহননের পথেও হাঁটে কয়েকবার। প্রাণে বেঁচে গেলেও স্বাভাবিক জীবন হয়ে পড়ে বিপর্যস্ত, কেননা ওইসব ভিডিও ও ছবি টেলিগ্রাম গ্রুপে ছড়িয়ে দেয় নেশাগ্রস্থ ছেলেটি ।
তৃতীয় ঘটনাটি ঘটেছে অন্য আরেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীর সঙ্গে। অনলাইনে পরিচয় হয় একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আশরাফুল হাসান মল্লিক প্রত্যয়ের সঙ্গে। কিন্তু মেয়েটি টের পায়নি যে প্রত্যয় একজন দূর্ধর্ষ হ্যাকার। মেয়েটির সাবেক প্রেমিকের সঙ্গে বিনিময় হওয়া অন্তরঙ্গ ছবি ও ভিডিও কৌশলে হস্তগত করে ছেলেটি, তারপর তা ছড়িয়ে দেয় পমপম গ্রুপে। অনলাইনে ভাইরাল করে দিয়ে মেয়েটিকেই আবার সাহায্যের হাত বাড়ায়। বিপদ থেকে উদ্ধার করবে বলে কৌশলে সখ্যতা গড়ে তোলে। মেয়েটি যতক্ষণে টের পায়, বড্ড বেশি দেরী হয়ে যায়। একদিকে টাকার চাপ, অন্যদিকে মানসিক অত্যাচার, প্রতি রাতে কাঁদতে কাঁদতে ভোর হয় মেয়েটির। সকলের অগোচরে প্রিয় সন্তানের জীবনে এত কিছু ঘটে গেছে টেরই পাননি ক্ষমতাবান বাবা!
চতুর্থ ঘটনা ফাইজুল মল্লিকের যার বাবা সৌদি প্রবাসী। সে হোস্টেলে থেকে লেখাপড়া করে। এবার এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়ার কথা। ফাইজুল ক্ষোভের বশবর্তী হয়ে, প্রেমের দিনগুলোতে সাবেক প্রেমিকার সাথে নিজের একান্ত মুহুর্তের ধারণ করা ভিডিও সাবেক প্রেমিকার অন্য বন্ধুর সঙ্গে জুড়ে দিয়ে পমপম গ্রুপকে অনুরোধ করে কন্টেন্টটি ভাইরাল করতে। এরপর বেশ কিছু ফেসবুক আইডি খুলে সেগুলো দিয়ে ভূক্তভোগি ছেলে ও মেয়েটিকে হয়রানি করতে থাকে।
প্রতিটি ঘটনাতেই সিআইডি লক্ষ্য করে যে, অতি অল্প বয়সে অনলাইনের অন্ধকার জগতে ঢুকে পড়েছে অভিযুক্ত তরুণরা। বাবা-মায়ের উদাসীনতা এবং অতিরিক্ত আদর-ভালোবাসাকে পুঁজি করে কখনও গেম খেলার আড়ালে, কখনও পড়াশোনার খরচের কথা বলে বিপুল অংকের অর্থ নিয়ে বিপথে পা বাড়িয়েছে তারা। ভুক্তভোগি মেয়েরা তাদের একান্ত মুহুর্তের ছবি বা ভিডিও আদান-প্রদান করে যেমন ভুল করেছে, তারচেয়েও ভয়ানক অপরাধ করেছে এসকল তরুণ সেসব ছবি টেলিগ্রাম গ্রুপগুলোতে ভাইরাল করে। প্রতিটি ঘটনায় ভুক্তভোগিদের কান্না ও অসহায়ত্বই যেন আসামীদের আনন্দের উপলক্ষ্য তৈরি করেছে।
গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে মিরপুর মডেল থানা, ডিএমপির মামলা নং ৪৮ তাং- ১৯/০৭/২০২৩ ধারা -৮(১)/৮(২)/৮(৩)/৮(৫)(ক)পর্ণোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১২ রুজু করা হয়েছে এবং আরেকটি মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে।
দেশ যত ডিজিটাল হচ্ছে, চারিদিকে বাড়ছে নিত্য-নতুন অপরাধ। এসব অপরাধ দমনে সিআইডির সাইবার পুলিশ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৯ জুলাই সাভার, মিরপুর, উত্তরা এবং কুমিল্লার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ফাইজুল মল্লিক (২১), আশরাফুল প্রত্যয় (১৯), সাফিন রহমান (১৮) ও তামিম রহমান (২১) নামে ৪ তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডির সাইবার পুলিশের একটি চৌকস দল। প্রাথমিক অনুসন্ধান ও জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় তারা তাদের সাবেক প্রেমিকাদের হয়রানি করতে আপত্তিকর কন্টেন্ট পমপম গ্রুপের কাছে ভাইরাল করার জন্য দিয়েছিল।
গ্রেফতার তরুণদের অপরাধ সম্পর্কিত চারটি ঘটনা সচেতনতার জন্য উল্লেখ করা হলো:
প্রথম ঘটনাটি রাজধানীর এক বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর। কয়েক বছরের পুরনো প্রেম ভেঙ্গে গেলে নতুন বন্ধুদের সঙ্গে মিশতে শুরু করে মেয়েটি। এটি জেদের জন্ম দেয় এইচএসসি পরীক্ষার্থী সাবেক প্রেমিক সাফিন রহমানের মনে। ফলে মেয়েটিকে শায়েস্তা করার ছক আঁকতে থাকে সে। বেছে নেয় টেলিগ্রামের ভয়ানক অন্ধকার পথ। মেয়েটির প্রায় ২ শতাধিক একান্ত ব্যক্তিগত ছবি-ভিডিও, যেগুলো প্রেম-পর্বে নানা কৌশলে সে হস্তগত করেছিল, সেগুলো তুলে দেয় টেলিগ্রাম গ্রুপ পমপমের কাছে। এরপর মেয়েটির জীবনে নেমে আসে অন্ধকার। মেয়েটির নাম-পরিচয়সহ টেলিগ্রামে ভাইরাল করে দেয় চক্রটি। মেগা ফাইলের মাধ্যমে বিক্রি করতে থাকে মেয়েটির কন্টেন্ট। চেনা-অচেনা মানুষের চাপে, কটু কথায় বেশ কয়েকবার আত্মহত্যারও চেষ্টা করে মেয়েটি।
দ্বিতীয় ঘটনাটি এক এইচএসসি পরীক্ষার্থীর। প্রেমের ফাঁদে ফেলে যাকে মিরপুরের এক রেস্তোরায় নিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করে কুমিল্লার তামীম রহমান। সে দৃশ্য আবার মোবাইল ফোনে ধারণ করে রাখে। এরপর শুরু হয় ব্ল্যাক মেইলিং। টাকা এবং একান্ত ছবি দিতে দিতে ক্লান্ত মেয়েটি শেষে আত্মহননের পথেও হাঁটে কয়েকবার। প্রাণে বেঁচে গেলেও স্বাভাবিক জীবন হয়ে পড়ে বিপর্যস্ত, কেননা ওইসব ভিডিও ও ছবি টেলিগ্রাম গ্রুপে ছড়িয়ে দেয় নেশাগ্রস্থ ছেলেটি ।
তৃতীয় ঘটনাটি ঘটেছে অন্য আরেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীর সঙ্গে। অনলাইনে পরিচয় হয় একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আশরাফুল হাসান মল্লিক প্রত্যয়ের সঙ্গে। কিন্তু মেয়েটি টের পায়নি যে প্রত্যয় একজন দূর্ধর্ষ হ্যাকার। মেয়েটির সাবেক প্রেমিকের সঙ্গে বিনিময় হওয়া অন্তরঙ্গ ছবি ও ভিডিও কৌশলে হস্তগত করে ছেলেটি, তারপর তা ছড়িয়ে দেয় পমপম গ্রুপে। অনলাইনে ভাইরাল করে দিয়ে মেয়েটিকেই আবার সাহায্যের হাত বাড়ায়। বিপদ থেকে উদ্ধার করবে বলে কৌশলে সখ্যতা গড়ে তোলে। মেয়েটি যতক্ষণে টের পায়, বড্ড বেশি দেরী হয়ে যায়। একদিকে টাকার চাপ, অন্যদিকে মানসিক অত্যাচার, প্রতি রাতে কাঁদতে কাঁদতে ভোর হয় মেয়েটির। সকলের অগোচরে প্রিয় সন্তানের জীবনে এত কিছু ঘটে গেছে টেরই পাননি ক্ষমতাবান বাবা!
চতুর্থ ঘটনা ফাইজুল মল্লিকের যার বাবা সৌদি প্রবাসী। সে হোস্টেলে থেকে লেখাপড়া করে। এবার এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়ার কথা। ফাইজুল ক্ষোভের বশবর্তী হয়ে, প্রেমের দিনগুলোতে সাবেক প্রেমিকার সাথে নিজের একান্ত মুহুর্তের ধারণ করা ভিডিও সাবেক প্রেমিকার অন্য বন্ধুর সঙ্গে জুড়ে দিয়ে পমপম গ্রুপকে অনুরোধ করে কন্টেন্টটি ভাইরাল করতে। এরপর বেশ কিছু ফেসবুক আইডি খুলে সেগুলো দিয়ে ভূক্তভোগি ছেলে ও মেয়েটিকে হয়রানি করতে থাকে।
প্রতিটি ঘটনাতেই সিআইডি লক্ষ্য করে যে, অতি অল্প বয়সে অনলাইনের অন্ধকার জগতে ঢুকে পড়েছে অভিযুক্ত তরুণরা। বাবা-মায়ের উদাসীনতা এবং অতিরিক্ত আদর-ভালোবাসাকে পুঁজি করে কখনও গেম খেলার আড়ালে, কখনও পড়াশোনার খরচের কথা বলে বিপুল অংকের অর্থ নিয়ে বিপথে পা বাড়িয়েছে তারা। ভুক্তভোগি মেয়েরা তাদের একান্ত মুহুর্তের ছবি বা ভিডিও আদান-প্রদান করে যেমন ভুল করেছে, তারচেয়েও ভয়ানক অপরাধ করেছে এসকল তরুণ সেসব ছবি টেলিগ্রাম গ্রুপগুলোতে ভাইরাল করে। প্রতিটি ঘটনায় ভুক্তভোগিদের কান্না ও অসহায়ত্বই যেন আসামীদের আনন্দের উপলক্ষ্য তৈরি করেছে।
গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে মিরপুর মডেল থানা, ডিএমপির মামলা নং ৪৮ তাং- ১৯/০৭/২০২৩ ধারা -৮(১)/৮(২)/৮(৩)/৮(৫)(ক)পর্ণোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১২ রুজু করা হয়েছে এবং আরেকটি মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে।