ওয়ারেন, ১৩ ফেব্রুয়ারি : আনন্দ আয়োজনের মধ্য দিয়ে গতকাল রোববার নগরীর শিব মন্দির টেম্পল অব জয়ে বিশ্ব ভ্যালেন্টাইনস ডে বা ভালোবাসা দিবস পালিত হয়েছে। সকলের অংশগ্রহণে এ আয়োজনে মন্দিরের হল রুম আনন্দমুখর হয়ে ওঠে।
সন্ধ্যায় মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা ড. দেবাশীষ মৃধার জন্মদিনের কেক কাটার মধ্য দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান। পরে আকর্ষনীয় খেলাধুলা নাচে-গানের সাথে সবাই মেতে ওঠে এই আনন্দ আয়োজনে। খেলাগুলোর মধ্যে ছিল কপালে দম্পতি শব্দজট, টিপ পরানো, বেলুন ফাটানো, বেলুন ফোলানো। গানের সাথে সাথে দর্শকরা আনন্দের সাথে এসব খেলা উপভোগ করেছেন।
দম্পতি শব্দজটে রাজশ্রী ও রিঙ্কু শর্মা প্রথম, সৌরভ সরকার ও ফাল্গুনী দ্বিতীয় এবং চম্পা ও অরুপ পুরকায়স্থ তৃতীয় হয়েছেন। টিপ পরানো প্রতিযোগিতায় প্রথম সঙ্গীতা পাল, দিপীকা দাশ দ্বিতীয় এবং তৃতীয় হয়েছেন সৌরভ সরকার ও ফাল্গুনী। বেলুন ফোলানো প্রতিযোগিতায় দিপীকা দাশ প্রথম, পৃথা দেব দ্বিতীয় এবং বহ্নি দাশ তৃতীয় হয়েছেন। বিজয়ীদের পুরষ্কৃত করা হয়।
দ্বিতীয় পর্বে ভালোবাসা দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. দেবাশীষ মৃধা বলেছেন, জীবনের সুন্দরতম আনন্দ এবং সুখ আমরা পাই ভালোবাসা দিয়ে এবং ভালোবাসা পেয়ে। আমাদের একটি মাত্র ক্ষমতা আছে সে হলো ভালোবাসা দেওয়ার ক্ষমতা। আমরা কিন্তু ভালোবাসা চাইতে পারিনা শুধুই দিতে পারি, আর এই দেওয়ার মাঝেই আনন্দ।
তিনি বলেন, এই যে সুন্দর গোলাপ ফুলটিকে দেখছেন, এর কিন্তু জন্ম হয়েছে ভালোবাসা দেওয়ার জন্য। সে কিন্তু তার সমস্ত শক্তি দিয়ে ফুটেছে এই পৃথিবীকে ভালোবাসার জন্য, আনন্দ দেওয়ার জন্য। ভালোবাসার রংগে সে পাপড়ি গুলোকে মেলে ধরেছে। আনত নেত্রে সে সূর্যের দিকে, পৃথিবীর দিকে তাকিয়ে আছে। আপনার দিকে, ভালোবাসা পাওয়ার জন্য কিন্তু সে চাইছে না, দাবী করছে না।
তিনি বলেন, ভালোবাসা মানে ভালোতে বাস করা। সে আপনার ভালোতে বাস করছে। তার কোনও অভিমান নেই, অভিযোগ নেই। সে সবাইকে ভালোবাসছে, কেউ একজন তাকে তুলে নিয়ে হয়তো খোপায় পড়ছে, এবং সে তারই হচ্ছে কোনো অনুযোগ ছাড়াই। প্রকৃত ভালোবাসা-ই এই পৃথিবীর সর্ব স্রেষ্ঠ ক্ষমতা। এই ক্ষমতার বলে আমরা অজেয়কে জয় করতে পারি।
তিনি বলেন তাই আসুন আমরা সবাই এই গোলাপের মত করে ভালোসার পাপড়ি মেলে ফুটে থাকি। ভালোবাসার উষ্ণতায় জড়িয়ে রাখি পরিবার, পরিজন, আত্মীয় সজন, দেশ ও জাতিকে এমনকি সমগ্র পৃথিবীকে, এই হোক আমাদের ভালোবাসা দিবসের শপথ। সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, একে অন্যের ভালোতে থাকুন।
আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মন্দিরের কো অর্ডিনেটর রতন হাওলাদার, প্রিস্ট পূর্নেন্দু চক্রবর্তী অপু, সৌরভ চৌধুরী, অজিত দাশ, রাখি রঞ্জন রায় প্রমুখ। সভাশেষে সকলেই অত্যন্ত আনন্দের সাথে রাতের খাবার গ্রহণ ও ফটো সেশনে অংশগ্রহণ করেন।
পরে ভ্যালেন্টাইনস ডে এবং বিয়ে বার্ষিকীর কেক কাটেন দুই দম্পতি। তারা হলেন মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা ড. দেবাশীষ মৃধা ও তার সহধর্মিনী চিনু মুধা এবং মন্দিরের প্রিস্ট পুর্নেন্দু চক্রবর্তী অপু ও চন্দনা বানার্জী। সেই মুহূর্তটাকে একটা অন্য মাত্রা দিতে উভয় দম্পতি করেন মালা বদল।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে মন্দিরের প্রিস্ট পূর্নেন্দু চক্রবর্তী অপু ও তার সঙ্গীরা একটি গানের সাথে ঠোঁট মিলিয়ে নেচে গেয়ে দর্শকদের আনন্দ দেন। সকলেই এসব আনন্দের রেশ নিয়ে ঘরে ফিরেন। সাজ সজ্জায় ছিলেন মৃদুল কান্তি সরকার, সৌরভ চৌধুরী এবং পূর্নেন্দু চক্রবর্তী অপু। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন চিনু মৃধা ও সৌরভ চৌধুরী। সাউন্ড সিস্টেমে ছিলেন রাজর্ষি চৌধুরী গৌরব।
Share
Tweet
Pin