অভিযুক্ত আশীষ দাশগুপ্ত
লাখাই, (হবিগঞ্জ) : বর্তমান সরকারের কৃষিবান্ধব নীতি ও কর্মকাণ্ডের ফলশ্রুতিতে বেড়েছে খাদ্যশস্য উৎপাদন, দেশ হচ্ছে স্বনির্ভর। কৃষিতে লাভজনক, বানিজ্যিকীকরণ ও আধুনিকায়নের উদ্দেশ্যে সমন্বিত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্প হাতে নিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ।
২০২০- ২০২৫ সাল পর্যন্ত ৫ বছর মেয়াদী এই প্রকল্পে উন্নয়ন সহায়তার (ভর্তুকি) মাধ্যমে কৃষকদের ১২ ধরনের ৫১ হাজার ৩০০ টি কৃষি যন্ত্র দেওয়ার কথা। প্রকল্প বাস্তবায়নের ব্যয় হচ্ছে ৩ হাজার ২০ কোটি টাকা। এই টাকা থেকে কৃষি যন্ত্র কেনার ক্ষেত্রে হাওর ও উপকূলীয় এলাকার কৃষকেরা ৭০ শতাংশ এবং অন্যসব এলাকার কৃষকেরা ৫০ শতাংশ ভর্তুকি পাবেন। উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে কৃষিতে বর্তমান সরকারের উন্নয়ন সহায়তা (ভর্তুকি) বাবদ সামগ্রিক ব্যয় ২৫ হাজার ৯৯৮ কোটি টাকা।
কৃষি খাতকে ঘিরে সরকারের এই কার্যক্রম নিঃসন্দেহে প্রান্তিক কৃষকদের জন্য আর্শীবাদ স্বরুপ। কিন্তু কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, কৃষকের যন্ত্রের ভর্তুকির সুবিধা পকেটে ঢোকাতে মাঠে সক্রিয় অসাধু কর্মকর্তারা ও স্থানীয় দালাল চক্র। দালালদের সুপারিশে উপজেলা কর্মকর্তারা কৃষকের নাম তালিকাভুক্ত করেন। তাদের কারনে সরকারের সুফল থেকে বঞ্চিত প্রান্তিক পর্যায়ের অনেক কৃষক।
এরই বাস্তব চিত্র ফুটে উঠেছে হাওরবেষ্টিত লাখাই উপজেলার ১নং লাখাই ইউনিয়নের স্বজনগ্রামে। সেখানে সরকারি ভর্তুকি যন্ত্রপাতি নিজ নামে নিয়ে অন্যত্র বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে স্বজনগ্রামের বাসিন্দা আশীষ দাশগুপ্তের বিরুদ্ধে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, নিজ নামে এবং তার ঘনিষ্ঠ লোকদের মাধ্যমে একাধিক যন্ত্রপাতি কিনে এনে তা পার্শ্ববর্তী কিশোরগঞ্জ জেলাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে রমরমা বানিজ্য করছে সে। তাকে একাজে সহায়তা করছেন লাখাই উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা অমিত ভট্টাচার্য্য।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ৭/৮ মাস পূর্বে লাখাই উপজেলা কৃষি অফিস থেকে ভর্তুকির মাধ্যমে পাওয়ার টিলারচালিত সীডার এনে তা ব্যবহার না করে মাধবপুরে তার চাচাতো বোনের স্বামী সঞ্জয় দেব বাপ্পুর নিকট বিক্রি করেন। শরীফপুর গ্রামের বাসিন্দা ও লাখাই বাজারের মেশিন মেকানিক যতীশ বৈষ্ণব জানান, ৫/৬ মাস আগে আমি নতুন মেশিন ফিটিং করে লাখাই থেকে মাধবপুরের রতনপুরে আশীষ দাশগুপ্তের ছোটবোন জামাইয়ের (সঞ্জয় দেব বাপ্পু) কাছে পৌঁছে দিয়েছি। বিনিময়ে আমাকে ১ হাজার টাকা মজুরি দিয়েছে। আশীষ দাশগুপ্ত বিভিন্ন সময়ে তার আয়ত্তের লোকদের দিয়ে একাধিক ধান মাড়াই করার মেশিন এনে তা ব্যবহার না করে পার্শ্ববর্তী অষ্টগ্রাম উপজেলায় বিক্রি করেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা মোতি মিয়া জানান, গুপ্তহাটি হরিমন্দিরে একটি মেশিনের বাক্স দীর্ঘদিন ছিল। পরে তা লোকজনের মাধ্যমে গাড়িতে করে নিয়ে যেতে শুনেছি। তাছাড়া নতুন মেশিন দিয়ে সে হাওরে কোনো চাষাবাদ করেনি। স্থানীয় বাসিন্দা ও সাবেক প্যানেল চেয়ারম্যান আইয়ুব রেজা ইমরান জানান, সে বিভিন্ন সময়ে নামে বেনামে মেশিন এনে রাতের আধাঁরে বিক্রি করে। যার কারনে আমাদের স্বজনগ্রামের কৃষকরা এর সুফল পায় না।
স্বজনগ্রামের বাসিন্দা তাউছ মিয়া জানান, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা অমিত ভট্টাচার্যের মাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে সে মেশিন, সরকারি বীজ, সার বিক্রি করে। পাওয়ার টিলারটি বাক্সবন্দী অবস্থায় গুপ্ত হাটি হরিমন্দিরে ছিল। পরে মেকানিক ষতীশ বৈষ্ণব ও প্রতিবেশি খোকন মিয়াকে দিয়ে তার চাচাতো বোনের স্বামীর কাছে পাঠিয়ে দেয়। তাছাড়া অমিত ভট্টাচার্যের সহযোগিতায় আশীষ দাশগুপ্ত নিজের ঘনিষ্ট লোক যাদের অধিকাংশ কৃষক নয় তাদের নিয়ে কৃষি সমিতি গঠনের মাধ্যমে টাকা পয়সা আত্মসাতের পাঁয়তারা করে। যার ফলে প্রকৃত কৃষকেরা কোনো সুযোগ সুবিধা পায় না।
গুপ্তহাটির বাসিন্দা জালাল মিয়া জানান, বিগত অগ্রহায়ন মাসে আশীষ দাশগুপ্ত কৃষি অফিস থেকে ৫ বস্তা সার আনে। তন্মধ্যে আমার কাছে ১ বস্তা টিএসপি সার ৮ শত টাকায় বিক্রি করেছে ।
স্থানীয় বাসিন্দা অর্চনা সূত্রধর জানান, টুম্পার স্বামী (সঞ্জয় দেব বাপ্পু) লাখাই থেকে এসে মেশিনটি নিয়ে যায়। সে আমাদের ঘরে আসলে তাকে মেশিনের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করি এবং সে জানায়, মেশিনটি সে লাখাই থেকে কিনে নিয়ে যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে সঞ্জয় দেব বাপ্পুর সাথে মুঠোফোনে আলাপ হলে জানান, আশীষ দাশগুপ্ত আত্মীয় হওয়ার সুবাধে তিনি তার (আশীষ দাশগুপ্ত) ব্যক্তিগত মেশিনটি হালচাষের জন্য নিয়েছেন এবং মেশিনটি পুরাতন ছিল। পরবর্তীতে তিনি নতুন মেশিনটি অব্যবহৃত অবস্থায় মেকানিকের মাধ্যমে নিয়েছেন বলে স্বীকার করেন এবং সেটি তার বাড়িতেই দীর্ঘদিন ধরে রয়েছে ।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা অমিত ভট্টাচার্যের সাথে মুঠোফোনে তার বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন,আশীষ দাশগুপ্ত কৃষি অফিসে আবেদনের মাধ্যমে ভর্তুকি দিয়ে মেশিন নিয়েছে। কৃষি কর্মকর্তার নির্দেশে আমি সরেজমিনে মেশিনটি তদারক করতে গেলে সেটি তার বাড়িতে পাই নি৷
লাখাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান মিজান এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তিন বছরের আগে ভর্তুকির যন্ত্রপাতি বিক্রি বা হস্তান্তর করার কোনো আইন নেই। আমি সরেজমিনে গিয়ে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখবো।
লাখাই, (হবিগঞ্জ) : বর্তমান সরকারের কৃষিবান্ধব নীতি ও কর্মকাণ্ডের ফলশ্রুতিতে বেড়েছে খাদ্যশস্য উৎপাদন, দেশ হচ্ছে স্বনির্ভর। কৃষিতে লাভজনক, বানিজ্যিকীকরণ ও আধুনিকায়নের উদ্দেশ্যে সমন্বিত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্প হাতে নিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ।
২০২০- ২০২৫ সাল পর্যন্ত ৫ বছর মেয়াদী এই প্রকল্পে উন্নয়ন সহায়তার (ভর্তুকি) মাধ্যমে কৃষকদের ১২ ধরনের ৫১ হাজার ৩০০ টি কৃষি যন্ত্র দেওয়ার কথা। প্রকল্প বাস্তবায়নের ব্যয় হচ্ছে ৩ হাজার ২০ কোটি টাকা। এই টাকা থেকে কৃষি যন্ত্র কেনার ক্ষেত্রে হাওর ও উপকূলীয় এলাকার কৃষকেরা ৭০ শতাংশ এবং অন্যসব এলাকার কৃষকেরা ৫০ শতাংশ ভর্তুকি পাবেন। উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে কৃষিতে বর্তমান সরকারের উন্নয়ন সহায়তা (ভর্তুকি) বাবদ সামগ্রিক ব্যয় ২৫ হাজার ৯৯৮ কোটি টাকা।
কৃষি খাতকে ঘিরে সরকারের এই কার্যক্রম নিঃসন্দেহে প্রান্তিক কৃষকদের জন্য আর্শীবাদ স্বরুপ। কিন্তু কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, কৃষকের যন্ত্রের ভর্তুকির সুবিধা পকেটে ঢোকাতে মাঠে সক্রিয় অসাধু কর্মকর্তারা ও স্থানীয় দালাল চক্র। দালালদের সুপারিশে উপজেলা কর্মকর্তারা কৃষকের নাম তালিকাভুক্ত করেন। তাদের কারনে সরকারের সুফল থেকে বঞ্চিত প্রান্তিক পর্যায়ের অনেক কৃষক।
এরই বাস্তব চিত্র ফুটে উঠেছে হাওরবেষ্টিত লাখাই উপজেলার ১নং লাখাই ইউনিয়নের স্বজনগ্রামে। সেখানে সরকারি ভর্তুকি যন্ত্রপাতি নিজ নামে নিয়ে অন্যত্র বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে স্বজনগ্রামের বাসিন্দা আশীষ দাশগুপ্তের বিরুদ্ধে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, নিজ নামে এবং তার ঘনিষ্ঠ লোকদের মাধ্যমে একাধিক যন্ত্রপাতি কিনে এনে তা পার্শ্ববর্তী কিশোরগঞ্জ জেলাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে রমরমা বানিজ্য করছে সে। তাকে একাজে সহায়তা করছেন লাখাই উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা অমিত ভট্টাচার্য্য।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ৭/৮ মাস পূর্বে লাখাই উপজেলা কৃষি অফিস থেকে ভর্তুকির মাধ্যমে পাওয়ার টিলারচালিত সীডার এনে তা ব্যবহার না করে মাধবপুরে তার চাচাতো বোনের স্বামী সঞ্জয় দেব বাপ্পুর নিকট বিক্রি করেন। শরীফপুর গ্রামের বাসিন্দা ও লাখাই বাজারের মেশিন মেকানিক যতীশ বৈষ্ণব জানান, ৫/৬ মাস আগে আমি নতুন মেশিন ফিটিং করে লাখাই থেকে মাধবপুরের রতনপুরে আশীষ দাশগুপ্তের ছোটবোন জামাইয়ের (সঞ্জয় দেব বাপ্পু) কাছে পৌঁছে দিয়েছি। বিনিময়ে আমাকে ১ হাজার টাকা মজুরি দিয়েছে। আশীষ দাশগুপ্ত বিভিন্ন সময়ে তার আয়ত্তের লোকদের দিয়ে একাধিক ধান মাড়াই করার মেশিন এনে তা ব্যবহার না করে পার্শ্ববর্তী অষ্টগ্রাম উপজেলায় বিক্রি করেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা মোতি মিয়া জানান, গুপ্তহাটি হরিমন্দিরে একটি মেশিনের বাক্স দীর্ঘদিন ছিল। পরে তা লোকজনের মাধ্যমে গাড়িতে করে নিয়ে যেতে শুনেছি। তাছাড়া নতুন মেশিন দিয়ে সে হাওরে কোনো চাষাবাদ করেনি। স্থানীয় বাসিন্দা ও সাবেক প্যানেল চেয়ারম্যান আইয়ুব রেজা ইমরান জানান, সে বিভিন্ন সময়ে নামে বেনামে মেশিন এনে রাতের আধাঁরে বিক্রি করে। যার কারনে আমাদের স্বজনগ্রামের কৃষকরা এর সুফল পায় না।
স্বজনগ্রামের বাসিন্দা তাউছ মিয়া জানান, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা অমিত ভট্টাচার্যের মাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে সে মেশিন, সরকারি বীজ, সার বিক্রি করে। পাওয়ার টিলারটি বাক্সবন্দী অবস্থায় গুপ্ত হাটি হরিমন্দিরে ছিল। পরে মেকানিক ষতীশ বৈষ্ণব ও প্রতিবেশি খোকন মিয়াকে দিয়ে তার চাচাতো বোনের স্বামীর কাছে পাঠিয়ে দেয়। তাছাড়া অমিত ভট্টাচার্যের সহযোগিতায় আশীষ দাশগুপ্ত নিজের ঘনিষ্ট লোক যাদের অধিকাংশ কৃষক নয় তাদের নিয়ে কৃষি সমিতি গঠনের মাধ্যমে টাকা পয়সা আত্মসাতের পাঁয়তারা করে। যার ফলে প্রকৃত কৃষকেরা কোনো সুযোগ সুবিধা পায় না।
গুপ্তহাটির বাসিন্দা জালাল মিয়া জানান, বিগত অগ্রহায়ন মাসে আশীষ দাশগুপ্ত কৃষি অফিস থেকে ৫ বস্তা সার আনে। তন্মধ্যে আমার কাছে ১ বস্তা টিএসপি সার ৮ শত টাকায় বিক্রি করেছে ।
স্থানীয় বাসিন্দা অর্চনা সূত্রধর জানান, টুম্পার স্বামী (সঞ্জয় দেব বাপ্পু) লাখাই থেকে এসে মেশিনটি নিয়ে যায়। সে আমাদের ঘরে আসলে তাকে মেশিনের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করি এবং সে জানায়, মেশিনটি সে লাখাই থেকে কিনে নিয়ে যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে সঞ্জয় দেব বাপ্পুর সাথে মুঠোফোনে আলাপ হলে জানান, আশীষ দাশগুপ্ত আত্মীয় হওয়ার সুবাধে তিনি তার (আশীষ দাশগুপ্ত) ব্যক্তিগত মেশিনটি হালচাষের জন্য নিয়েছেন এবং মেশিনটি পুরাতন ছিল। পরবর্তীতে তিনি নতুন মেশিনটি অব্যবহৃত অবস্থায় মেকানিকের মাধ্যমে নিয়েছেন বলে স্বীকার করেন এবং সেটি তার বাড়িতেই দীর্ঘদিন ধরে রয়েছে ।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা অমিত ভট্টাচার্যের সাথে মুঠোফোনে তার বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন,আশীষ দাশগুপ্ত কৃষি অফিসে আবেদনের মাধ্যমে ভর্তুকি দিয়ে মেশিন নিয়েছে। কৃষি কর্মকর্তার নির্দেশে আমি সরেজমিনে মেশিনটি তদারক করতে গেলে সেটি তার বাড়িতে পাই নি৷
লাখাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান মিজান এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তিন বছরের আগে ভর্তুকির যন্ত্রপাতি বিক্রি বা হস্তান্তর করার কোনো আইন নেই। আমি সরেজমিনে গিয়ে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখবো।