এই ছবি এখন শুধুই স্মৃতি

আপলোড সময় : ২১-০৪-২০২৪ ০৫:৪১:৩০ পূর্বাহ্ন , আপডেট সময় : ২১-০৪-২০২৪ ০৫:৪১:৩০ পূর্বাহ্ন
একটা ছবি, একটা ছোট্ট গল্প। ছবিতে নিজ চেম্বারে বসা আব্দুর রহমান ভাই। তিনি আজ বেঁচে নেই। ২০২২ সালে ১২ মার্চ সন্ধ্যার দিকে ছবিটি তুলেছিলাম। আজ ২০ এপ্রিল ২০২৪ সাল ঠিক একই সময়ে তিনি চলে গেলেন পরপারে। ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন। তার জীবনের বর্ণাঢ্য গল্প পত্রিকায় তুলে ধরবো, এ জন্যই চিন্ময় দাদার সঙ্গে হ্যামট্রাম্যাকের বাসায় গিয়েছিলাম। সাক্ষাতকার নেওয়ার আগে ছবিটি তুলেছিলাম। তবে পরিবার নিয়ে বেড়াতে বেরুবেন, তাই পুর্ণাঙ্গ সাক্ষাৎকারটি নেওয়া সম্ভব হয়নি সেদিন। যতটুকু সময় সাক্ষাৎ বা কথাবার্তা হয়েছে বুঝতে অসুবিধা হয়নি তিনি যে সৎ ও সরস মানুষ ছিলেন। একজন ভালো মানুষের দেখা পেয়েছিলাম সেদিন। প্রেরণা পেয়েছিলাম রহমান ভাইয়ের কথা বার্তায়।
বেড়াতে বেরুবেন এর মধ্যেও আমাদের আপ্যায়ন করিয়েছেন। তড়িগড়ি করে চা আর মিষ্টিমুখ করিয়েছেন চিন্ময় দা আর আমাকে। উনার জীবনী সম্পর্কে কাগজে ১০টি প্রশ্ন লিখে দিয়ে আসছিলাম। অবসরে উত্তর লিখে দেবেন বলছিলেন। কিছুদিন পর ফোন করে বিনয়ের সঙ্গে পত্রিকায় জীবনী ছাপাতে অনাগ্রাহ দেখালেন। তখন বুঝলাম প্রচারবিমুখ নিভৃতচারী এক সমাজ সেবক রহমান ভাই। অথচ হবিগঞ্জে এক সময়ে প্রচারের প্রথম কাতারের মানুষ ছিলেন। তার রিপোর্টে বহু লোক, অনেক পরিবার উপকৃত হয়েছেন। এই পরবাসে এসে নিজেরে গুটিয়ে নিয়েছেন প্রচার প্রসারে। জীবনযাপন করছেন একবারেই নিরবে নিভৃতে। 
সুপ্রভাত মিশিগান সম্পাদক চিন্ময় দাদার কাছ থেকে জেনেছি, রহমান ভাই একসময় হবিগঞ্জের রাজপথ কাঁপানো তুখোড় ছাত্র নেতা ছিলেন। ছাত্র ইউনিয়ন (মতিয়া) হবিগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি ছিলেন। ৮০ দশকে নিজস্ব প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেছেন ‘দৈনিক বাংলা’ পত্রিকায়। তিনি ভালো ফিচার লেখক হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। তখনকার সমেয় উনার বেশ কয়েকটি ফিচার দেশজুরে আলোচিত হয়েছে। 
প্রথমে পূর্বালী ব্যাংকে পরে চাকুরী করেছেন পরে বন বিভাগে। আমেরিকা আসেন নব্বই দশকে ওপি লটারীতে। এই মিশিগানে ইমিগ্রেশন কনসালন্ট্যান্ট হিসেবে কাজ করেছেন সুদীর্ঘকাল। এ পেশায় জড়িত অনেকের বদনাম একজন সংবাদকর্মী হিসেবে কানে আসে। কিন্তু উনার কোনো বদনাম শুনিনি কখনো। অত্যন্ত সুনামের সহিত কাজ করে গেছেন। ন্যায়পরায়ন ও পরোপকারী মানুষ ছিলেন রহমান ভাই। ইদানিং উনার কথা বেশ কয়েক দিন মনে পড়েছে। কিন্তু জীবন জীবিকার তাগিতে নিজেও ব্যস্ত। ট্যাক্স ফাইল সিজন তিনিও বেশি ব্যস্ত। এজন্যই যোগাযোগ করিনি। আজ নিজেরে খারাপ লাগছে। 
অসুস্থ জনিত কারণে আজ ২০ এপ্রিল শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় হ্যামট্টাম্যাক শহরের নিজ বাসায় শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স ছিল ৭২ বছর। স্ত্রী ও ২ কন্যাসহ বহু আত্নীয়স্বজন রেখে গেছেন।
স্বজনরা জানিয়েছেন, ২৪ এপ্রিল সপরিবারে দেশে যাওয়ার কথা ছিল। অথচ এর চার দিন আগেই আল্লাহর ডাকে চলে গেলেন না ফেরার দেশে। রহমান ভাইয়ের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে বাঙালি মহলে। 
কাল রোববার বাদ জোহর ডেট্টয়েট মসজিদ নূরে তার জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের তার জানাজার নামাজে শরীক হওয়ার জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে দাওয়াত করা হয়েছে। পরপারে ভালো থাকুন রহমান ভাই, মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে এই দোয়াই করি।

সম্পাদকীয় :

চিনু মৃধা : সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি

সম্পাদক ও প্রকাশক : চিন্ময় আচার্য্য, নির্বাহী সম্পাদক : কামাল মোস্তফা, সহযোগী সম্পাদক : আশিক রহমান,

বার্তা সম্পাদক : তোফায়েল রেজা সোহেল, ফিচার এডিটর : সৈয়দ আসাদুজ্জামান সোহান, স্টাফ রিপোর্টার : মৃদুল কান্তি সরকার।

অফিস :

22021 Memphis Ave Warren, MI 48091

Phone : +1 (313) 312-7006

Email : [email protected]

Website : www.suprobhatmichigan.com