ঘোড়ায় চড়ে ‘ভিক্ষা’ করেন জালু মিয়া

আপলোড সময় : ১৫-০৪-২০২৩ ০১:০২:৪৩ পূর্বাহ্ন , আপডেট সময় : ১৫-০৪-২০২৩ ০১:০২:৪৩ পূর্বাহ্ন
ভোলা,১৫ এপ্রিল (ঢাকা পোস্ট) : বাংলায় প্রবচন আছে- ‘ঘোড়ায় চড়িয়া মর্দ্দ হাঁটিয়া চলিল’। ঠিক সেরকম না হলেও- ‘ঘোড়ায় চড়িয়া মর্দ্দ ভিক্ষা করিতে গেল-’ এ কথার বাস্তব উদাহরণ হচ্ছেন ভোলার জালু মিয়া (৫৫)। তিনি ভিক্ষা করেন ঘোড়ায় চড়ে।
জালু মিয়া বোরহানউদ্দিনের সাচড়া ইউনিয়নের চরগঙ্গাপুর গ্রামের মৃত মতলেবের ছেলে ৷ তার ৪ ভাই ও এক বোন রয়েছে। এক সময় তিনি ওই গ্রামের বাড়িতে থাকতেন। কিন্তু সেখানে জায়গা-জমি হারিয়ে একই ইউনিয়নের পাশের গ্রামের চর গঙ্গাপুর গ্রামে বোনের বাড়িতে চলে আসেন ৷ সেখানে এসে অন্যের জমিতে পলিথিন আর নারিকেল পাতা দিয়ে তৈরি ঝুপড়ি ঘরে বসবাস শুরু করেন এবং নিজের ভরণ-পোষণ চালাতে ভিক্ষাবৃত্তি শুরু করেন। ভিক্ষুক জালু মিয়া প্রতিদিন ঘোড়ায় চড়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরে ভিক্ষা করেন ৷ বয়সের ভারে হাঁটতে পারেন না বলে এভাবে ভিক্ষা করেন বলে জানান তিনি।
তিনি বছর চারেক আগে ভিক্ষার টাকা জমিয়ে ১৫ হাজার টাকায় ঘোড়াটি কেনেন। আর সেই ঘোড়ায় চড়েই মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে ভিক্ষা করেন। প্রতিদিন ভিক্ষা করে তার আয় হয় ৩শ থেকে ৪শ টাকার মতো। কিন্তু এই সামানু টাকায় ঘোড়ার খাবার কেনার পর কোনো রকম চলছে তার মানবেতর সংসার জীবন।
জালু মিয়া ঢাকা পোস্টকে জানান, অনেক আগে আমি বিয়ে করি ওই ঘরে একটা ছেলে ছিল। কিছু দিন পর ছেলে ও তার মা মারা যায়। পরে দ্বিতীয় বিয়ে করি ৷ সেই ঘরে এখন কোনো সন্তান নাই। তাই স্ত্রী আর আমি ভিক্ষা করে খুব কষ্টে জীবন যাপন করছি। গত চার বছর আগে ভিক্ষা করে ১৫ হাজার টাকায় একটা ঘোড়া কিনেছি। ঘোড়াটা আমার একমাত্র সম্বল। ঘোড়াটা আছে বলেই ঘরে চুলা জ্বলে।
তিনি আরও জানান, বিয়ের আগে মানুষের কাজ করে খেতাম ৷ এখন আমি বৃদ্ধ হয়ে গেছি। এজন্য এখন কেউ কাজে নেয় না। তাই বাধ্য হয়ে ভিক্ষা করতে হচ্ছে। শেষ বয়সে স্ত্রীকে নিয়ে থাকার জন্য একটি সরকারি ঘরের দাবি জানান জালু মিয়া।
তার প্রতিবেশী কালাম খান জানান, তাদের কোনো জায়গা-জমি ও সন্তান নেই ৷ সে তার স্ত্রীকে নিয়ে অসহায় অবস্থায় এখানে থাকছেন। তাই ভিক্ষা করেই তার জীবন চলে। তারা যে ঘরে থাকছেন তা বসবাস করার উপযোগী নয়।
সাচড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মহিবুল্লাহ মৃধা ঢাকা পোস্টকে জানান, শুনেছি হাঁটতে না পারায় বৃদ্ধ জালু মিয়া ঘোড়ায় চড়ে ভিক্ষা করেন। সরকারি ও ব্যক্তিগতভাবে যতটুকু পারি তাকে সহযোগিতা করি। তিনি যেন সরকারি ঘর পায় সেই চেষ্টা চলছে।

সম্পাদকীয় :

চিনু মৃধা : সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি

সম্পাদক ও প্রকাশক : চিন্ময় আচার্য্য, নির্বাহী সম্পাদক : কামাল মোস্তফা, সহযোগী সম্পাদক : আশিক রহমান,

বার্তা সম্পাদক : তোফায়েল রেজা সোহেল, ফিচার এডিটর : সৈয়দ আসাদুজ্জামান সোহান, স্টাফ রিপোর্টার : মৃদুল কান্তি সরকার।

অফিস :

22021 Memphis Ave Warren, MI 48091

Phone : +1 (313) 312-7006

Email : [email protected]

Website : www.suprobhatmichigan.com