হ্রদে ফুল ভাসিয়ে বৈসাবি শুরু পাহাড়ে

আপলোড সময় : ১২-০৪-২০২৫ ০২:০৬:৫৩ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ১২-০৪-২০২৫ ০২:০৬:৫৩ অপরাহ্ন
রাঙামাটি, ১২ এপ্রিল : আনন্দ, উচ্ছ্বাস ও সম্প্রীতির বার্তা নিয়ে রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদের জলে ভাসানো হয়েছে বিজুর ফুল। আর এই ফুল ভাসানোর মধ্যদিয়ে শুরু হলো তিন দিনব্যাপী পাহাড়ের ক্ষুদ্র-নৃ গোষ্ঠীদের সবচেয়ে বড় সামাজিক অনুষ্ঠান বৈসাবির মূল আনুষ্ঠানিকতা। শনিবার (১২ এপ্রিল) সকালে কাপ্তাই হ্রদের পানিতে ফুল ভাসিয়ে নতুন বছরের জন্য শুভকামনা জানিয়ে গঙ্গা দেবীর নিকট প্রার্থনা করে পাহাড়ি তরুণ-তরুণীরা।
সবেমাত্র পূর্ব আকাশে সূর্য ওঠেছে। আর এরই মধ্যে রাঙামাটির কেরানী পাহাড় এলাকায় কাপ্তাই হ্রদের তীরে হাজির হয়েছেন শত-শত পাহাড়ি তরুণ-তরুণী। ঐতিহবাহী পিনন-হাদির পোশাকে তরুণী এবং ধুতি-পাঞ্জাবি গায়ে দিয়ে হাতে ফুল-পাতা নিয়ে তরুণরা ছুটে চলছেন কাপ্তাই হ্রদের তীরে। তীরে গঙ্গা মায়ের উদ্দেশে ফুল উৎসর্গ করে কলাপাতায় সেই ফুল পানিতে ভাসিয়ে দিচ্ছেন তারা।
শুধু কেরানী পাহাড়ে নয়, জেলার বিভিন্ন স্থানে পাহাড়িরা ফুল ভাসিয়ে দিনটি শুরু করেছেন। পানিতে ফুল ভাসিয়ে নিজ পরিবার এবং দেশ তথা সমগ্র জীবের মুক্তির জন্য গঙ্গা দেবীর নিকট প্রার্থনা করা হয়। 
পানিতে ফুল ভাসিয়ে পুরনো বছরের দুঃখ বেদনাই যেনো ভাসিয়ে দিয়ে নতুন দিনের সম্ভাবনার আলো জ্বালান পাহাড়ের বাসিন্দারা। একই ভাবে পুরনো দিনের বেদনা ভুলে নতুন দিনের প্রত্যয়ের কথা জানায় ফুল ভাসাতে আসা পাহাড়ি তরুণ-তরুণীরা।
রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ জানান, রাঙামাটি উৎসবের নগরীরে পরিণত হয়েছে। রাঙামাটিজুড়ে মানুষ উৎসবে মেতে ওঠেছে। আমরা আশা করছি এই অঞ্চলের মানুষের মাঝে যে সম্প্রীতির উজ্জ্বল ইতিহাস রয়েছে সে সৌহাদ্য অটুট থাকবে এবং নতুন করে সম্প্রীতি আরো বৃদ্ধি পাবে। নতুন বছর সম্প্রীতি বয়ে নিয়ে আসুক এই কামনা করি।
রবিবার বছরের শেষ দিন চৈত্র সংক্রান্তিতে পাঁজন রান্না আতিথেয়তা এবং পরের দিন নববর্ষে বিহারে বিহারে প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া বছরের প্রথম দিন জলকেলির মাধ্যমে মারমারা সাংগ্রাই উৎসব উদযাপন করবেন।
এদিকে বান্দরবানের সাঙ্গু নদীর স্বচ্ছ জলে নানা রঙের ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে চাকমা ও তঞ্চঙ্গা সম্প্রদায়ের বর্ষবরণ বিজু ও বিষু উৎসব। শনিবার (১২ এপ্রিল) ভোরে শহরের মধ্যমপাড়া সাঙ্গু নদীর ঘাটে স্বচ্ছ জলে তরুণ-তরুণী ও শিশু-কিশোর ঐতিহ্যবাহী নানা রঙের পোশাক পরে নদীর স্বচ্ছ জলে ফুল ভাষায়। এ সময় তারা নতুন বছরের শুভ কামনায় ভগবান বুদ্ধের কাছে প্রার্থনা জানায়। অনেকে এ সময় নদীতে পূজাও দেন।
বান্দরবানের বালাঘাটা, বালাঘাটা, করুনাপুর সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে চাকমা ও তাঞ্চঙ্গা সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষ এই ফুল ভাসানো উৎসবে অংশ নেয়। তাদের বিশ্বাস নতুন বছরের শুরুতে নদীতে ফুল ভাসালে সামনের বছরগুলোতে মঙ্গল বয়ে আনবে।
বান্দরবানের পাড়ায়-পাড়ায় চলছে মারমা সম্প্রদায়ের বর্ষবরণ সাংগ্রাই উৎসবের নানা আয়োজন। জলকেলি ও পিঠা তৈরি আয়োজনের প্রস্তুতি ও চলছে। এবার শহরের রাজার মাঠে সপ্তাহব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। উৎসবের মধ্যে থাকছে মারমা তরুণ-তরুণীদের দলবেঁধে পানি খেলা, পিঠা তৈরি, চন্দন পানিতে বৌদ্ধ মূর্তি স্নান, সাংগ্রাই রেলি, ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন গ্রামীন খেলাধুল ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এছাড়া ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের বর্ষবরণ বৈসু ও ম্রো সম্প্রদায়ের বর্ষবরণ চাংক্রান নিয়েও জ্বলছে নান আয়োজন। বান্দরবানের ১১টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বর্ষবরণ উৎসব দেখতে ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে লোকজন ভিড় জমিয়েছেন।

সম্পাদকীয় :

চিনু মৃধা : সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি

সম্পাদক ও প্রকাশক : চিন্ময় আচার্য্য, নির্বাহী সম্পাদক : কামাল মোস্তফা, সহযোগী সম্পাদক : আশিক রহমান,

বার্তা সম্পাদক : তোফায়েল রেজা সোহেল, ফিচার এডিটর : সৈয়দ আসাদুজ্জামান সোহান, স্টাফ রিপোর্টার : মৃদুল কান্তি সরকার।

অফিস :

22021 Memphis Ave Warren, MI 48091

Phone : +1 (313) 312-7006

Email : [email protected]

Website : www.suprobhatmichigan.com