রাষ্ট্রদূতদের অতিরিক্ত নিরাপত্তা প্রত্যাহার, যা বলছে যুক্তরাষ্ট্র

আপলোড সময় : ১৬-০৫-২০২৩ ১১:১৯:০৮ পূর্বাহ্ন , আপডেট সময় : ১৬-০৫-২০২৩ ১১:১৯:০৮ পূর্বাহ্ন
ওয়াশিংটন, ১৬ মে : যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যসহ বাংলাদেশে নিযুক্ত কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রদূতদের অতিরিক্ত নিরাপত্তা প্রত্যাহার করেছে সরকার। মূলত যেসব রাষ্ট্রদূত বা হাইকমিশনার বাইরে চলাচলের সময় অতিরিক্ত পুলিশি নিরাপত্তা পেয়ে থাকেন, তাদের জন্য পুলিশের পরিবর্তে এখন থেকে আনসার সদস্যরা নিয়োজিত থাকবে।
সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এমন তথ্য গণমাধ্যমকে জানানোর পর এই ইস্যুতে কথা বলেছে যুক্তরাষ্ট্র। এসময় কূটনীতিকদের সুরক্ষা ইস্যুতে ভিয়েনা কনভেনশন মনে রাখার পাশাপাশি মার্কিন কূটনৈতিক মিশন ও কর্মীদের নিরাপত্তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে জানিয়ে দিয়েছে দেশটি।
যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় সোমবার (১৫ মে) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে উপপ্রধান মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল এ তথ্য জানিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে ব্রিফিংয়ের বিস্তারিত বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে।
ব্রিফিংয়ে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যসহ (কয়েকটি দেশের) রাষ্ট্রদূতদের অতিরিক্ত নিরাপত্তা প্রত্যাহার করেছে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ। পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেছেন, তারা মার্কিন রাষ্ট্রদূত এবং যুক্তরাজ্যসহ অন্য প্রায় ছয় দেশের রাষ্ট্রদূতকে কোনও অতিরিক্ত নিরাপত্তা দেবে না। আপনি জানেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূতের কনভয় সাম্প্রতিক দিনগুলোতে এবং ২০১৮ সালে কয়েকবার সরকার-সমর্থকদের আক্রমণের শিকার হয়েছে। আপনি কি বাংলাদেশে রাষ্ট্রদূত এবং দূতাবাসের কর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন?
জবাবে বেদান্ত প্যাটেল বলেন, আমি মার্কিন দূতাবাস বা এর কর্মীদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিশদ বিবরণে কথা বলতে চাচ্ছি না। কিন্তু আমি উল্লেখ করতে চাই, কূটনৈতিক সম্পর্কের ভিয়েনা কনভেনশন অনুসারে, যে কোনও দেশকে অবশ্যই সব কূটনৈতিক মিশন প্রাঙ্গণ ও এর কর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য বাধ্যবাধকতাগুলো মেনে চলতে হবে এবং কর্মীদের ওপর কোনও আক্রমণ প্রতিরোধ করার জন্য কার্যকর সব পদক্ষেপ নিতে হবে। আমাদের কূটনৈতিক কর্মী এবং স্থাপনার নিরাপত্তা ও সুরক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এরপর বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচন এবং র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) ওপর থেকে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়ে পৃথক প্রশ্ন করা হয়। ওই সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, আমার দুটি ছোট প্রশ্ন রয়েছে। এর একটি ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি আফরিন আক্তার সম্পর্কে। বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন সম্পর্কে তিনি গত শনিবার বলেছেন, এটি (নির্বাচন) চূড়ান্তভাবে রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর (নির্ভর করছে) যদি তারা অংশগ্রহণ করতে চায় বা না চায়; যুক্তরাষ্ট্র হস্তক্ষেপ করবে না। বিএনপি বা অন্যান্য দল নির্বাচনে অংশ না নিলে তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র কী মন্তব্য করবে, এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচন কী সুষ্ঠু হবে?
আরেকটি বিষয় হচ্ছে- যুক্তরাষ্ট্রের অর্থপূর্ণ সন্ত্রাসবিরোধী সহায়তা সত্ত্বেও ২০০৪ এবং ২০০৫ সালে বিএনপি নেতৃত্বাধীন সরকারের শাসনামলে বাংলাদেশ ভয়ঙ্করভাবে সন্ত্রাসী হুমকির সম্মুখীন হয়েছিল। গ্লোবাল টেরোরিজম ইনডেক্স অনুযায়ী, ২০২৩ সালে সারা বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থানে ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে: যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে সন্ত্রাস দমনের কাজে যুক্ত থাকবে কি না এবং প্রেসিডেন্ট বাইডেনের প্রশাসনের র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার বিষয়ে নতুন কোনও পরিকল্পনা করছে কি না।
জবাবে বেদান্ত প্যাটেল বলেন, আমাকে কয়েকটি কথা বলতে দিন। প্রথমত, (আপনার প্রশ্নের বিষয়ে) ঘোষণা করার মতো নতুন কোনও তথ্য আমার কাছে নেই। তাই কোনও নিষেধাজ্ঞা বা এ জাতীয় কোনও বিষয়ে নতুন কোনও খবর নেই। তবে বিস্তৃতভাবে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্কের কথা বললে – আপনি আমাকে আগেও এটা বলতে শুনেছেন– গত বছর আমাদের দুই দেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর উদযাপন করেছে। আমরা যে সম্পর্কের জন্য অপেক্ষা করছি তা হলো রাজনৈতিক দল বা প্রার্থী নির্বিশেষে সেই সম্পর্ককে আরও গভীর করা এবং বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের সহযোগিতাকে আরও দৃঢ় করা। বিশ্বজুড়ে যে কোনও নির্বাচনে আমাদের প্রত্যাশা হলো– নির্বাচন অবাধ এবং সুষ্ঠু হবে। তবে এর বাইরে রাজনৈতিক দল বা প্রার্থী বা এই জাতীয় কিছুর ক্ষেত্রে অন্তর্দৃষ্টি দেওয়ার মতো আর কিছুই নেই।
উল্লেখ্য, যেসব রাষ্ট্রদূত বা হাইকমিশনার বাইরে চলাচলের সময় অতিরিক্ত পুলিশি নিরাপত্তা পেয়ে থাকেন, তাদের জন্য পুলিশের পরিবর্তে আনসার সদস্যদের নিয়োজিত করা হবে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক।
অন্যদিকে কূটনীতিকদের বাড়তি নিরাপত্তা বন্ধের সিদ্ধান্তে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, বর্তমানে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক এবং নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তাই কূটনীতিকদের বাড়তি নিরাপত্তা দেওয়ার কোনো আবশ্যকতা নেই। এছাড়া ঢাকায় নিযুক্ত বিদেশি রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারদের গাড়িতে পতাকা উড়ানো বন্ধের বিষয়েও ভাবছে সরকার।
প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, ভারত, সৌদি আরব, অস্ট্রেলিয়া ও জাপানসহ বেশ কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রদূত চলাচলের সময় পুলিশের নিরাপত্তা পেয়ে থাকেন।
সূত্র : ঢাকা পোস্ট

সম্পাদকীয় :

চিনু মৃধা : সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি

সম্পাদক ও প্রকাশক : চিন্ময় আচার্য্য, নির্বাহী সম্পাদক : কামাল মোস্তফা, সহযোগী সম্পাদক : আশিক রহমান,

বার্তা সম্পাদক : তোফায়েল রেজা সোহেল, ফিচার এডিটর : সৈয়দ আসাদুজ্জামান সোহান, স্টাফ রিপোর্টার : মৃদুল কান্তি সরকার।

অফিস :

22021 Memphis Ave Warren, MI 48091

Phone : +1 (313) 312-7006

Email : [email protected]

Website : www.suprobhatmichigan.com