পূর্বাচল প্লট জালিয়াতির তিন মামলায় শেখ হাসিনার ২১ বছরের কারাদণ্ড

আপলোড সময় : ২৭-১১-২০২৫ ০১:৩৩:২৮ পূর্বাহ্ন , আপডেট সময় : ২৭-১১-২০২৫ ০১:৩৩:২৮ পূর্বাহ্ন
ঢাকা, ২৭ নভেম্বর :  পূর্বাচলের নতুন শহর প্রকল্পে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে দায়ের করা পৃথক তিন মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সাত বছর করে মোট ২১ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া মামলার অন্যান্য আসামিদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বিচারক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন এ রায় ঘোষণা করেন।
তিন মামলায় শেখ হাসিনা, তার পরিবারের সদস্যসহ মোট ৪৭ জনকে আসামি করা হয়। প্রথম মামলায় শেখ হাসিনাসহ ১২ জন, দ্বিতীয় মামলায় শেখ হাসিনা, সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ১৭ জন এবং তৃতীয় মামলায় শেখ হাসিনা, তার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ ১৮ জন। ৯১ জন সাক্ষীর জবানবন্দিতে উঠে আসে—রাজধানীতে নিজস্ব জমি থাকা সত্ত্বেও তা গোপন করে সরকারি প্লট নেন শেখ হাসিনা ও তার ছেলে-মেয়ে। অবৈধভাবে রাজউকের ৩০ কাঠা জমি নেয়ার অভিযোগে এসব মামলা দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আদালতে বারবার সমন, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা এবং পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হলেও অধিকাংশ আসামি অনুপস্থিত থাকেন। ফলে পলাতক অবস্থায়ই শেখ হাসিনাসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে বিচার কার্যক্রম সম্পন্ন হয়। অভিযোগপত্রে দুদক জানায়, রাজউকের আবাসন নীতি লঙ্ঘন করে প্রধানমন্ত্রীত্বের ক্ষমতা ব্যবহার করে ছেলে-মেয়েসহ নিজের নামে জমি নেন শেখ হাসিনা এবং জমির আবেদনে মিথ্যা তথ্য-হলফনামা দাখিল করেন।
হাসিনা পরিবারের তিন সদস্য ছাড়াও এ মামলাগুলোতে আরও ২০ জন সরকারি কর্মকর্তা ও সাবেক নীতিনির্ধারক আসামি হিসেবে রয়েছেন। তাদের মধ্যে একমাত্র গ্রেপ্তার আসামি—রাজউকের সাবেক সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মোহাম্মদ খুরশীদ আলম—কারাগারে থেকে নিয়মিত আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার সময়ও তিনি আদালতে হাজির ছিলেন এবং আত্মপক্ষ সমর্থনে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন।
হাসিনা পরিবারের বাইরে যেসব ব্যক্তির নাম রয়েছে, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য—সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন, মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার ও কাজী ওয়াছি উদ্দিন, সিনিয়র সহকারী সচিব পূরবী গোলদার, প্রশাসনিক কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম সরকার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য কবির আল আসাদ, তন্ময় দাস, নুরুল ইসলাম, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, অবসরপ্রাপ্ত মেজর প্রকৌশলী সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী, শফি উল হক এবং রাজউকের বিভিন্ন পর্যায়ের অন্যান্য কর্মকর্তা।
গত বছরের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে সংঘটিত অনিয়ম ও দুর্নীতির বিভিন্ন অভিযোগ প্রকাশ্যে আসতে থাকে। সেই ধারাবাহিকতায় ‘ক্ষমতার অপব্যবহার ও অনিয়মের মাধ্যমে’ পূর্বাচলে ৬০ কাঠার প্লট বরাদ্দ নেয়ার অভিযোগে গত জানুয়ারিতে ছয়টি মামলা করে দুদক। এসব মামলায় শেখ হাসিনার পাশাপাশি তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, বোন শেখ রেহানা, ভাগ্নি ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিক, আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তী ও ভাগ্নে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববিকে আসামি করা হয়।
ছয়টি মামলাতেই শেখ হাসিনাকে আসামি করা হয়েছে। তার পরিবারের তিনটি মামলা চলছে একই আদালতে; আর রেহানা পরিবারের তিন মামলার বিচার চলছে অন্য আদালতে একত্রে। গত ৩১ জুলাই এসব মামলায় সাতজনসহ (একই ব্যক্তি একাধিক মামলায় আসামি) মোট ২৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে আদালত। পরে গত ২৩ নভেম্বর যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে হাসিনা পরিবারের তিন মামলার রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করা হয়। আর রেহানা পরিবারের একটি মামলার যুক্তিতর্ক শেষে আগামী ১ ডিসেম্বর রায়ের দিন রাখা হয়েছে।
 

সম্পাদকীয় :

চিনু মৃধা : সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি

সম্পাদক ও প্রকাশক : চিন্ময় আচার্য্য, নির্বাহী সম্পাদক : কামাল মোস্তফা, সহযোগী সম্পাদক : আশিক রহমান,

বার্তা সম্পাদক : তোফায়েল রেজা সোহেল, ফিচার এডিটর : সৈয়দ আসাদুজ্জামান সোহান, স্টাফ রিপোর্টার : মৃদুল কান্তি সরকার।

অফিস :

22021 Memphis Ave Warren, MI 48091

Phone : +1 (313) 312-7006

Email : [email protected]

Website : www.suprobhatmichigan.com