মহান বিজয় দিবস আজ

আপলোড সময় : ১৫-১২-২০২৫ ১১:৪১:৫০ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ১৫-১২-২০২৫ ১১:৪১:৫০ অপরাহ্ন
ঢাকা, ১৬ ডিসেম্বর : আজ মহান বিজয় দিবস। বাঙালি জাতির হাজার বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে গৌরবময় দিন আজ। নয় মাসের দুঃস্বপ্নের অবসান ঘটিয়ে এদিন বাঙালি জাতির জীবনে এসেছে নতুন প্রভাত। বিশ্ব মানচিত্রে একটি স্বাধীন ভূখণ্ড হিসেবে জায়গা করে নেয় বাংলাদেশ। দিনটি একই সঙ্গে বিজয়ের আনন্দ-উচ্ছ্বাস ও শহীদের স্মরণে ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পালন করবে দেশবাসী।
২৫ মার্চের সেই কালরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ঘুমন্ত, নিরস্ত্র বাঙালির ওপর ট্যাংক-কামান নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে চালিয়েছিল ইতিহাসের নৃশংসতম গণহত্যা। সেই রাত থেকেই শুরু হয় প্রতিরোধের আগুনে জ্বলে ওঠা মুক্তির সংগ্রাম। দেশের সর্বস্তরের মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়েন যুদ্ধে। যাঁদের হাতে ছিল না কোনো আধুনিক অস্ত্র, ছিল শুধু অদম্য সাহস আর স্বাধীনতার তীব্র আকাঙ্ক্ষা।
দীর্ঘ নয় মাস পাকিস্তানের হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে অসম যুদ্ধে লড়েছিলেন সব ধর্ম, বর্ণ ও শ্রেণির বীর সন্তানেরা। এই যুদ্ধে শহীদ হন ৩০ লাখ মানুষ, সম্ভ্রম হারান ২ লাখ মা-বোন, ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় দেশের বিপুল সম্পদ। তবু পরাধীনতার শৃঙ্খল ছিঁড়ে বিজয় ছিনিয়ে আনেন মুক্তিযোদ্ধারা। ১৬ ডিসেম্বর ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয় চূড়ান্ত বিজয়।
কিন্তু স্বাধীনতার এত বছর পরও জাতির সামনে বারবার প্রশ্ন হয়ে এসেছেএই কি সেই স্বপ্নের বাংলাদেশ? বিশেষ করে গত ১৬ বছরে আওয়ামী লীগের শাসনামলে গণতন্ত্র, ভোটাধিকার ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ভয়াবহভাবে সংকুচিত হয়েছিল। এই অচলায়তনের বিরুদ্ধে ইতিহাসের আরেকটি মোড় ঘুরে আসে ২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লবে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ফেটে পড়ে দীর্ঘদিনের ক্ষোভ ও বঞ্চনা। রাজপথে নেমে মানুষ জানিয়ে দেন স্বাধীনতা কেবল অর্জনের নয়, রক্ষারও বিষয়। জুলাই বিপ্লব নতুন করে মনে করিয়ে দেয়, জনগণই রাষ্ট্রের প্রকৃত মালিক।
আজ সরকারি ছুটি। ৫৬ হাজার বর্গমাইলের পাড়া-মহল্লা, সড়কের মোড়ে মোড়ে বাজবে মুক্তির অবিস্মরণীয় গান। বাড়ির ছাদের কার্নিশে, অফিস-আদালত, দোকানপাটে, অনেক যানবাহনে উড়বে লাল-সবুজ পতাকা। আলোকসজ্জায় রঙিন হয়ে উঠবে সরকারি-বেসরকারি গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও সড়কদ্বীপগুলো। দিনভর মঞ্চে আর মিছিলে অনুরণন তুলবে অগণিত কণ্ঠের সুর ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি…।’
বিজয় দিবসে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে পৃথক বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেছেন, ‘স্বাধীনতার প্রকৃত সুফল জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে হলে গণতন্ত্রকে আরো শক্তিশালী ও প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে হবে।’ অন্যদিকে, প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এবারের বিজয় দিবস হোক জাতীয় জীবনে নতুনভাবে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার দিন। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে জনগণের প্রকৃত ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়া ও গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথে যে নবযাত্রা সূচিত হয়েছে তা যেকোনো মূল্যে রক্ষার শপথ নেওয়ার দিন।’
আজ সকাল থেকেই সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে যাবেন সর্বস্তরের মানুষ। পরাধীনতা ঘোচাতে জাতির যে বীর সন্তানেরা তাঁদের জীবন উৎসর্গ করেছেন, কৃতজ্ঞ জাতি আজ তাঁদের গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করবে। 

সম্পাদকীয় :

চিনু মৃধা : সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি

সম্পাদক ও প্রকাশক : চিন্ময় আচার্য্য, নির্বাহী সম্পাদক : কামাল মোস্তফা, সহযোগী সম্পাদক : আশিক রহমান,

বার্তা সম্পাদক : তোফায়েল রেজা সোহেল, ফিচার এডিটর : সৈয়দ আসাদুজ্জামান সোহান, স্টাফ রিপোর্টার : মৃদুল কান্তি সরকার।

অফিস :

22021 Memphis Ave Warren, MI 48091

Phone : +1 (313) 312-7006

Email : [email protected]

Website : www.suprobhatmichigan.com