আমেরিকা , বৃহস্পতিবার, ০৫ জুন ২০২৫ , ২২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
ডেট্রয়েট মেট্রো বিমানবন্দরে স্পিরিট এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে বোমা হামলার হুমকি ডেট্রয়েটের স্টকএক্সের বিরুদ্ধে আলোকচিত্রীর কপিরাইট মামলা মিশিগানে মাছের দূষণ নিয়ে শত শত নতুন সতর্কতা জারি মিশিগানে বিপজ্জনক জৈবিক রোগজীবাণু পাচারের চেষ্টা,  চীনা স্কলার গ্রেপ্তার ওহাইওতে রাস্তা পার হওয়ার সময় ওক পার্কের এক ব্যক্তি নিহত মিশিগানে হামের প্রকোপ বাড়ছে   মেট্রো ডেট্রয়েটে মানব ও অর্থ পাচারের অভিযোগে দুই নারী অভিযুক্ত শেলবি টাউনশিপে পুলিশের গুলিতে ট্রয় বাসিন্দার মৃত্যু মিশিগান রাজ্যে ALS কেস রিপোর্ট করা এখন বাধ্যতামূলক ডেট্রয়েটে দুর্ঘটনায় বাংলাদেশি পিতা-পুত্রের মৃত্যুর ঘটনায় চালকের ১৫ বছরের কারাদণ্ড ফ্লিন্ট সিটি কাউন্সিল বৈঠকে বিশৃঙ্খলা, দর্শকদের সঙ্গে পুলিশের ধাক্কাধাক্কি ওয়াটারফোর্ডের ডোমিনো’স পিৎজার বিরুদ্ধে ইসলামোফোবিয়ার অভিযোগ ট্রাম্প প্রশাসনের বাতিল করা ছাত্র ভিসা ফিরে পেলেন চার আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী সিটি ম্যানেজারের স্থগিতাদেশ ঘিরে হ্যামট্রাম্যাক কাউন্সিলের বিরুদ্ধে মামলা ডেট্রয়েটে গ্রীষ্মের উষ্ণতা ও বজ্রঝড়ের সম্ভাবনা, তারপর ফের শীতলতা মিশিগানে স্কুল মনোবিজ্ঞানীর তীব্র  ঘাটতি, মানসিক স্বাস্থ্যসেবায় সংকট প্রতিবাদের নামে পিওনি ধ্বংস : ফিলিস্তিনি বার্তা উদ্ধার ইউএম ক্যাম্পাসে বাংলাদেশের বাজারে নতুন ডিজাইনের ছয়টি নতুন নোট  বড় জয় : জামায়াতে ইসলামী নিবন্ধন ফিরে পেলো ম্যাডিসন হাইটসে সশস্ত্র ব্যারিকেড, পুলিশ অভিযানে গ্রেপ্তার

প্রাণের টানে গাজীর গান গেয়ে চলছেন লাখাইয়ের রফিক শাহ

  • আপলোড সময় : ২৭-০২-২০২৩ ০৩:৪৫:৪৭ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৭-০২-২০২৩ ০৩:৪৫:৪৭ পূর্বাহ্ন
প্রাণের টানে গাজীর গান গেয়ে চলছেন লাখাইয়ের রফিক শাহ
লাখাই, (হবিগঞ্জ) ২১ আগস্ট : শহুরে গান আর ইন্টারনেটকেন্দ্রিক সংস্কৃতির দাপটে অনেক কিছুর মতোই হারিয়ে যেতে বসেছে গাজীর গান বা গীতও। তবে দেশের অনেক স্থানে এই গানের ধারা প্রাণের টানে ধরে রেখেছেন কিছু শিল্পী। লোকজ সংস্কৃতির অংশ এ-ই লোকগাঁথা গেয়ে  লাখাইয়ের রফিক  শাহের (৭৮) জীবন চলে। উপজেলার করাব গ্রামের  মৃত রইছ আলীর ছেলে তিনি। দীর্ঘ ৬০ বছর যাবত দেশের বিভিন্ন স্থানে গাজী কালুর গান শুনিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন তিনি। 
উপজেলার স্বজনগ্রামে গিয়ে দেখা যায়  হাতে ডুগডুগি বাজিয়ে সুরেলা কন্ঠে বাড়ি বাড়ি গিয়ে  গাজী কালুর মাহাত্ম্য বর্ণনা করছেন রফিক শাহ। মানুষ সাধ্যমতো চাল, ডাল, টাকা পয়সা দিচ্ছেন। পাশাপাশি মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে শুনছেন বাস্তবিক জীবনের পটভূমিতে গাওয়া এ-ই লৌকিক উপাখ্যান। 
এ-ই প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে রফিক শাহ জানান, আধুনিক যুগের ছেলেমেয়েরা এই গানগুলো না শুনলেও বয়স্করা এগুলো মনোযোগ দিয়ে শুনে।  কেউ কেউ খুশি হয়ে ১০/২০ টাকা দেয় । আল্লাহর রহমতে ভালোই চলছে জীবন। সুমিত্রা রায় নামে একজন জানান, উনাদের কাছ থেকে তাবিজ নিয়েছিলাম ছোট বাচ্চার প্রস্রাবের সমস্যা দূর করার জন্য। সমস্যা দূর  হয়েছে। 
এখনো অনেকে গাজীর নামে মানত করে। নিরাপদ থাকা, সন্তান লাভ, প্রকৃতির বালা-মুসিবত থেকে ফসল রক্ষা, মামলা মোকদ্দমায় জয়লাভ, রোগ থেকে আরোগ্য লাভ, এমনকি কন্যাসন্তানের সময়মতো সুপাত্রে বিয়ে না হওয়া ইত্যাদি সমস্যা উত্তরণের জন্য গাজী পীরের শরণাপন্ন হয়। গাজী পীরকে মনে করা হয় অলৌকিক শক্তির অধিকারী অসাম্প্রদায়িক জিন্দাপীর। অলৌকিক শক্তির কারণেই সুন্দরবনের বাঘ ও কুমির গাজীর কথা নাকি শোনে। গাজীভক্তদের বিশ্বাস, গাজী পীরের নামে দানসহ গাজীর দোয়া মানুষ যে কোনো অশুভ শক্তিকে বশ করতে পারে।
শাহ গাজী, কালু ও চম্পাবতীর পরিচয় নিয়ে আছে নানা ইতিহাস। জনশ্রুতি আছে বৈরাগ নগরের শাসক দরবেশ শাহ সিকান্দারের ছেলে শাহ গাজী। কালু ছিলেন শাহ সিকান্দারের পোষ্যপুত্র। আর চম্পাবতী ছিলেন সাপাই নগরের সামান্ত রাজা রামচন্দ্র ওরফে মুকুট রাজার মেয়ে। 
প্রথম দেখাতেই শাহ গাজী আর চম্পাবতী একে অন্যের প্রেমে পড়ে যায়। ভুলে যান নিজেদের জাত, ধর্ম, স্থান, কাল। তাদের মিলনের মাঝে প্রাচীর হয়ে দাঁড়ায় সামাজিক ও ধর্মীয় রীতিনীতি। ছাপাই নগরের বলিহর বাওরের তমাল গাছ তলায় গাজী নিয়মিত অপেক্ষা করতেন চম্পাবতীর জন্য। তার সার্বক্ষণিক  সঙ্গী ছিলেন কালু। 
গাজীর প্রকৃত নাম গাজী মিয়া বা বড়খান গাজী। তার পিতার মৃত্যু হয় ১৩১৩ সালে। সেসময় তিনি ছিলেন ত্রিবেনী ও সপ্তগ্রাম অঞ্চলের শাসনকর্তা। বাল্যকালেই ফকির-দরবেশের সাহচর্যে আধ্যাত্মিক সাধনায় উন্নতি লাভ করেন গাজী। পিতার কাছে শাসন ক্ষমতা নিতেও অস্বীকার করেন তিনি। ইসলাম প্রচার শুরু করেন দক্ষিণ বঙ্গের যশোর-খুলনা অঞ্চলে। ধর্ম প্রচারে বাধা প্রাপ্ত হয়ে রাজা মুকুট রায়ের সঙ্গে তুমুল যুদ্ধ হয় তার। তখনই হয়ত তার চম্পাবতীর সঙ্গে দেখা হয়।
অবশেষে গাজী অনুসারীদের নিয়ে বহু খণ্ড যুদ্ধের পর উদ্ধার করে চম্পাবতীকে। এরপর তারা বারোবাজার ফিরে এসেছিলেন। তবে গাজীর বাবা শাহ সিকান্দার বিষয়টা একেবারেই মেনে নেননি। মুকুট রাজা ছিলেন তারই প্রতিবেশী শাসক। হিন্দু সমাজের অসন্তুষ্টির কারণে তিনি গাজীকে বাড়িতেই উঠতে দেননি। বিতাড়িতও করেন সমাজ থেকে। তবে এখানে এসে গাজী পীর লোকজ দেবতা হিসেবে পূজিত হন। 
হিন্দু-মুসলমান অধ্যুষিত সুন্দরবনের সবাই তাকে স্মরণ করে। যে কেউ সুন্দরবনে ঢোকার আগে হাতজোড় করে বনবিবির পাশাপাশি গাজীর নামে দোহাই দিয়ে ঢোকে। সুন্দরবন সংলগ্ন লোকালয়গুলোতে সাদা বর্ণের মুখে দাড়িসহ কোথাও জামা-পায়জামা-পাঞ্জাবিসহ মূর্তি, কোথাও লুঙ্গি পরা ঘাড়ে গামছাসহ মূর্তি পূজিত হয়। এই পূজার নিরামিষ নৈবেদ্য হলো বাতাসা, পাটালি, আতপচালের শিরণি ইত্যাদি।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Suprobhat Michigan

কমেন্ট বক্স
প্রতিবেদকের তথ্য

সর্বশেষ সংবাদ
অ্যান আরবারে সেমি-ট্রাক দুর্ঘটনার পাশে পোড়া মৃতদেহ উদ্ধার

অ্যান আরবারে সেমি-ট্রাক দুর্ঘটনার পাশে পোড়া মৃতদেহ উদ্ধার