আমেরিকা , শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪ , ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
সাইবার হামলা : মিশিগানে ৫৬ হাজার মেডিসিন রোগীদের তথ্য ফাঁস অসহায় প্রাপ্তবয়স্কদের অর্থ আত্মসাতের দায়ে দুই নারী দোষী সাব্যস্ত গাড়ি নিয়ে হ্রদে  চালক ডেট্রয়েটে ২ জনকে গুলি করে হত্যা, সন্দেহভাজনদের খুঁজছে পুলিশ আজও মেট্রো ডেট্রয়েটে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিপাত ভিক্টরি ইনের ড্যারিক ড্রাগ মামলায় শাস্তির মুখোমুখি বিনোদন কেন্দ্রে বোমা হামলার হুমকি, তদন্তে নেমেছে ট্রেনটন পুলিশ ঝড়ের তাণ্ডবে দক্ষিণ-পূর্ব মিশিগানে হাজার হাজার মানুষ বিদ্যুৎহীন অবশেষে সচল হলো ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট  মেলভিনডেলে পুলিশকে গুলি করে হত্যা, সন্দেহভাজন গ্রেফতার মিশিগানে ইসকনের রথযাত্রায় ভক্তের ঢল বাংলাদেশে কারফিউ অব্যাহত, আরও একদিন বাড়ল সাধারণ ছুটি প্রেসিডেন্টের দৌড়ে সরে দাঁড়ালেন জো বাইডেন  বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনে দমন পীড়নের প্রতিবাদে বিক্ষোভে উত্তাল মিশিগান কোটা নিয়ে হাইকোর্টের রায় বাতিল করল সুপ্রিম কোর্ট বাংলাদেশে দেখা মাত্র গুলির নির্দেশ পন্টিয়াকে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় এক ব্যক্তি নিহত বাংলাদেশে কারফিউয়ের মাঝেও সংঘর্ষ কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে অগ্নিগর্ভ বাংলাদেশ বাংলাদেশে কারফিউ চলছে, নিহতের সংখ‍্যা বেড়ে ১০৫

বিশ্ব ঐতিহ্যের সুন্দরবন

  • আপলোড সময় : ২৭-০২-২০২৩ ০৩:৫৫:১৩ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৭-০২-২০২৩ ০৩:৫৫:১৩ পূর্বাহ্ন
বিশ্ব ঐতিহ্যের সুন্দরবন

সুন্দরবন : পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন হচ্ছে সুন্দরবন। ১৯৯৭ সালে এটি বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। বাংলাদেশের বহু দর্শনীয় স্থান ঘুরেছি কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে সুন্দরবন কখনো দেখা হয়নি। সেই আফসোস মেটাতেই বৈচিত্র্যময় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, বাহারি গাছপালা, বন্য পশুপাখি ও জীবজন্তু ঘেরা গা ছমছম পরিবেশে সুন্দরবন ভ্রমণ ছিল খুব রোমাঞ্চকর। এই ভ্রমণ কাহিনী নিয়ে দারুণ একটি এডভেঞ্জার গল্পের বই লিখে ফেলা সম্ভব, সেখানে অল্প কথায় সুন্দরবন নিয়ে কিছু লেখা আমার কাছে যেন এক দুরূহ ব্যাপার।

একদিন সকালে ঢাকা থেকে বাসে করে আমরা ৬৮ জনের দলবল নিয়ে যাত্রা শুরু করি। বাসের ভেতর হৈচৈ গান-বাজনা করতে করতে ক্লান্ত হয়ে শেষ বিকালের দিকে পৌঁছে গেলাম খুলনায়। সেখানে কিছু সময় যাত্রা বিরতিতে একটা হোটেলে খাওয়া দাওয়া সেরে নিলাম। তারপর আবার বাসে করে পৌঁছে গেলাম মংলা সমুদ্র বন্দরে। সেখানে ট্যুর এন্ড ট্রাভেলস এজেন্সি কর্তৃক আমাদের জন্য নির্ধারিত জাহাজে উঠে যার যার অবস্থান বুঝে নিলাম। জাহাজে থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা খুব ভালো ছিল। জাহাজে আমরা তিন রাত-দুই দিন অবস্থান করি। সবাই দলবদ্ধভাবে সুন্দরবন ঘুরে দেখা আর প্রতিদিনই প্রায় মধ্যরাত পর্যন্ত জাহাজের ডেকে বসে খোলা আকাশের নিচে গান বাজনা ও জম্পেশ আড্ডায় মেতে থাকতাম। সকালে ঘুম ভাঙতো বনের পাখিদের কলরবে। আমরা সবাই যেন আমাদের হারিয়ে যাওয়া শৈশব আবারও ফিরে পেয়েছিলাম।

এজেন্সির ব্যবস্থাপনায় আমাদের টিমের সাথে যুক্ত হয় একজন গাইড ও তিন জন বন্দুকধারী নিরাপত্তাকর্মী। তাদের দিকনির্দেশনা ও সার্বিক সহযোগিতায় আমরা নিরাপদে ও নিশ্চিন্তে হৈ-হুল্লোড় করে সুন্দরবন পরিদর্শন করি। সেখানে ঘুরে দেখার জন্য বন বিভাগের যাবতীয় ফরমালিটিজ এজেন্সি আগেই সম্পন্ন করে রাখে। সুন্দরবনের যেসব স্থানে দর্শনার্থীরা সাধারণত ভ্রমণ করে সেগুলো হলো করমজল, হিরণ পয়েন্ট, কটকা বিচ, স্মরণখোলা, টাইগার পয়েন্ট, ডিমের চর ইত্যাদি। আমরা প্রায় সবগুলো স্থানেই ঘুরেছি। যেদিন সকালে জাহাজ সুন্দরবনের উদ্দেশ্যে রওয়ানা করে, আমাদের সবার সে কী উচ্ছ্বাস! যেন এক অজানা স্বপ্নপুরীর দেশে জাহাজ ঢেউ তুলে এগিয়ে যাচ্ছে। 

উল্লেখ্য যে, সুন্দরবনের মোট আয়তন প্রায় ১০ হাজার বর্গ কিলোমিটার, যার বাংলাদেশের অংশে আছে ৬,০১৭ বর্গ কিলোমিটার। খুলনা , সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পটুয়াখালি ও বরগুনা জেলার অংশ নিয়েই বাংলাদেশের সুন্দরবন। জীববৈচিত্রে সমৃদ্ধ সুন্দরবনের ১,৮৭৪ বর্গকিলোমিটার জুড়ে রয়েছে নদীনালা ও বিল মিলিয়ে জলাকীর্ণ অঞ্চল।এখানে রয়েছে প্রায় ৩৫০ প্রজাতির উদ্ভিদ, ১২০ প্রজাতির মাছ, ২৭০ প্রাজাতির পাখি, ৪২ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ৩৫ সরীসৃপ এবং ৮ টি উভচর প্রাণী। সুন্দরী বৃক্ষের নামানুসারে এই বনের নাম সুন্দরবন রাখা হয়।
 

সুন্দরবনের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ও একইসঙ্গে বিপজ্জনক স্থান হচ্ছে হারবাড়িয়া। এটি বাঘের বাড়ি নামে পরিচিত। এখানে রয়েল বেঙ্গল টাইগার আর নানান বৈচিত্র্যময় প্রাণী ও পাখি দেখা যায়। খুব কাছ থেকে হরিণ দর্শন মেলে। বানর ও বন্য শূকর তো অহরহ। সুন্দরী গাছ এখানকার অন্যতম আর্কষণ। পুরো এলাকা সুন্দরী, গোলপাতাসহ বিভিন্ন উদ্ভিদে ঢাকা। এছাড়া আছে জাম ও কেওড়া বৃক্ষ। এখানকার একটি দীর্ঘ কাঠের পথ গভীর ম্যানগ্রোভ বন ঘুরে দেখতে পর্যটকদের সহায়ক হিসেবে কাজ করে।

সুন্দরবনের দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে কটকা বিচ অন্যতম। এ যেন সবুজে ঘেরা বিভিন্ন জীববৈচিত্র্যের সমাহার। এখানকার সৌন্দর্য অবলোকনের জন্য রয়েছে ওয়াচ টাওয়ার। এটি বিরল ও রাজকীয় বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল। এখানে সকাল-সন্ধ্যা হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়ার মতো পাখিদের কলতান কানে বাজে। এছাড়া আছে হরিণ, বাঘ ও বিভিন্ন ধরনের বানর। এখানেও সুন্দরী, গোলপাতা, কেওড়াসহ বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদ দেখা যায়।

একদিনের জার্নির জন্য করমজল পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয়। কারণ সুন্দরবনের প্রবেশপথে ও মংলা বন্দরের সবচেয়ে কাছে করমজল অবস্থিত। পাখিপ্রেমীদের জন্য এটি চমৎকার একটি জায়গা। এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বিমুগ্ধ হওয়ার মতো। বিভিন্ন ধরনের বন্যপ্রাণী তো আছেই। হরিণ ও কুমিরের প্রজনন কেন্দ্র এই করমজল। এছাড়া এখানে লবণাক্ত পানির কুমির, ডুব হাঁস, বানর, সাপ, শিয়াল, নদীর ডলফিন চোখে পড়ার মতো।

যেভাবে যাবেন:
ঢাকা থেকে সুন্দরবনে যাওয়ার বেশ কিছু পথ আছে। সেটা নির্ভর করবে আপনার বাজেট ও দিনযাপনের উপর। আমাদের মতো যেতে হলে, ঢাকা থেকে প্লেন, ট্রেন বা বাসে করে খুলনা যেতে হবে। সেখান থেকে মংলা বন্দরে এবং ওখান থেকে নৌপথে যাওয়ার জন্য জাহাজ, লঞ্চ, ট্রলার নিতে হবে। তবে খুলনা যাওয়ার আগেই কোন ট্যুর এন্ড ট্রাভেলস এজেন্সিতে বুকিং দিয়ে রাখা ভালো। এতে করে সেখানে গিয়ে কোন ঝামেলা পোহাতে হয় না।  তাদের বিভিন্ন ধরনের প্যাকেজ আছে, বাজেটের মধ্যে পছন্দ মতো প্যাকেজ নিয়ে সুন্দরবন ঘুরে আসা যায়। এদের মাধ্যমে দুই দিন-তিন রাত প্যাকেজে সর্বনিম্ন মাথাপিছু ২,৫০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৮,৫০০ টাকা খরচ পড়বে। তবে নিজেস্ব ব্যবস্থাপনায় গেলে খরচ আরও অনেক কম পড়বে কিন্তু এতে নিরাপত্তার ঝুঁকি থাকে।
ছবিগুলো তুলেছেন ডা. আল আমিন সুমন।

লেখক : সৈয়দ আসাদুজ্জামান সুহান : কবি, প্রাবন্ধিক ও কলামিস্ট



নিউজটি আপডেট করেছেন : Suprobhat Michigan

কমেন্ট বক্স
প্রতিবেদকের তথ্য

সর্বশেষ সংবাদ
ডিয়ারবর্ন হাইটসে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার

ডিয়ারবর্ন হাইটসে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার