মাধবপুর (হবিগঞ্জ) ৩ এপ্রিল : মাধবপুরে ঋণ দেওয়ার নামে মাইক্রো ব্যাংক নামে একটি ভুয়া এনজিও প্রতারণা করে সাধারণ মানুষের লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঋণ না দিয়ে ওই এনজিওর কর্মকর্তারা ৭০/৮০জন গ্রাহকদের সঞ্চয়ের টাকা নিয়ে এলাকা ছেড়ে গা-ঢাকা দিয়েছেন। খবর পেয়ে সোমবার ও মঙ্গলবার ভুক্তভোগীরা মাধবপুর পৌরশহরে অফিসে জড়ো হয়ে দেখেন অফিসে ঝুলছে তালা। কর্মকর্তারাও নেই, মোবাইলও বন্ধ। এ অবস্থায় অনেক সঞ্চয়দাতা দিশেহারা হয়ে আহাজারি করেছে। বাড়ির মালিকের ভুমিকা নিয়ে রহস্যের দানা বেঁধেছে গ্রাহকদের মধ্যে। গত বৃহস্পতিবার পৌরশহরের ২নং ওয়ার্ডের আব্দুল কুদ্দুছের বাড়ি ভাড়া নেয় মাইক্রো ব্যাংক নামে কথিত প্রতিষ্ঠান। অফিস খুলে “সোশ্যাল এন্টার প্রাইজ লোন” নামে কার্যক্রমের ষ্ট্রিকার লাগিয়ে লাগানো হয় অফিসে। ঋণ প্রদানের বিষয়ে দ্রুত প্রচারণা শুরু করে বিভিন্ন এলাকায়। মানুষকে মোটা ঋণ দেয়ার প্রলোভন দেয়। এরই মধ্যে ঋন দেয়ার নামে প্রায় শতাধিক গ্রাহক ও জোগাড় হয়ে যায়। তাদের কাছ থেকে সঞ্চয়ের নামে হাতিয়ে নেয় লাখ লাখ টাকা। হতদরিদ্র স্বল্প আয়ের মানুষ লাখ টাকার ঋন পাওয়ার আসায় ধার দেনা করে এককালীন সঞ্চয় পরিশোধ করে । এখন প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়ে আম ছালা দুটি হারিয়েছে তারা। অনেকই টাকার শোকে দিশেহারা হয়ে আহাজারি করছেন।
জানা যায়, মাইক্রো ব্যাংক নামে এনজিও’র পরিচয় দিয়ে ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমের আওতায় উপজেলার বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় ঋণ দেয়ার ফাঁদ ফাদে প্রতারক চক্রটি। কৌশলে এলাকার শতাধিক লোকের কাছ থেকে এককালীন সঞ্চয় হিসেবে অংকের টাকা নিয়ে তাদের ঋণ বিতরণের তারিখ ধার্য করে। মঙ্গলবার ছিল ঋণ বিতরণের নির্ধারিত তারিখ। এর আগেই প্রতারকচক্র অফিস ছেড়ে গা ঢাকা দিয়েছে। সোমবার মাধবপুর পৌর এলাকার সোনাই আবাসন এলাকার কয়েকজন গ্রাহক ঋণের টাকার বিষয়ে জানতে এসে দেখেন অফিস তালাবদ্ধ। কর্মকর্তারা লাপাত্তা হয়েছেন, তাদের মোবাইল বন্ধ। সোনাই আবাসন প্রকল্পের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা ঝারু মিয়া জানান, সোনাই আবাসন প্রকল্পের ডলি আক্তার, আবেদা আক্তার,
আনিছা খাতুন, মনোয়ারা সহ ৭/৮জনের কাছ থেকে ঋণ দেওয়ার নামে সাড়ে ৭ হাজার টাকা করে সঞ্চয় আদায় করে। ভুক্তভোগী প্রত্যেকে ৭০ হাজার টাকা করে ঋণ দেওয়ার কথা ছিল। উপজেলার ভেলাপুর গ্রামের এক প্রবাসী জানান, সতোরো হাজার পাঁচশত টাকা সঞ্চয় জমা দিয়েছিলেন তিনি যাতে ৩ লাখ টাকা ঋণ দেওয়ার কথা বলে এনআইডি কার্ডের ফটোকপি ও ৪ কপি ছবি নেওয়া হয়। বুল্লা গ্রামের জয়নাল মিয়ার কাছ থেকে ৮৫ হাজার টাকা নেওয়া হয়। তাকে সিএনজি কেনার জন্য ৩ লাখ টাকা ঋণ দেওয়ার কথা হয়। এভাবে প্রতারক চক্র প্রায় শতাধিক লোকজনের কাছ থেকে কৌশলে টাকা হাতিয়ে নিয়ে চম্পট দিয়েছে। এ ব্যাপারে বাড়ির মালিক আব্দুল কুদ্দুছের বক্তব্য জানার জন্য মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করেও তাকে পাওয়া যায়নি। মাধবপুর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মোঃ আতিকুর রহমান জানান, গ্রাহকদের মধ্যে অফিস প্রাঙ্গনে উত্তেজনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে। তবে এখন পর্যন্ত কেউ কোন অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হবে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Suprobhat Michigan