আমেরিকা , বৃহস্পতিবার, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ , ২০ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
ডেট্রয়েটে অগ্নিকান্ডে একজন নিহত, দমকলকর্মী আহত বাংলাদেশে নতুন মার্কিন রাষ্ট্রদূত হচ্ছেন ব্রেন্ট ক্রাইস্টেনসেন গ্রাহক ফেরাতে ম্যাকডোনাল্ডসের দাম কমানোর কৌশল হ্যাজেল পার্কে মা-ছেলের লাশ উদ্ধার, হত্যাকাণ্ডের তদন্তে পুলিশ ঐতিহাসিক রায় : বিচার বিভাগের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ফিরল সুপ্রিম কোর্টে স্কুল বাসের লাল বাতি অমান্য করলে এবার আর খালাস নেই : জরিমানা শুরু মিশিগানে আপেল উৎপাদনের পূর্বাভাস নিয়ে বিতর্ক রচেস্টার হিলসে হোটেল পার্কিং লটে গোলাগুলিতে নিহত ১, আহত ১ বর্ণিল অনুষ্ঠান ও সাংস্কৃতিক রঙে ভরল হ্যামট্রাম্যাক ডেট্রয়েটে শ্রমিক দিবসে ইউনিয়ন সদস্যদের ঐক্য প্রদর্শন রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সেনাপ্রধানের সাক্ষাৎ হত্যা ও রাষ্ট্রদ্রোহসহ পাঁচ মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন বিষয়ে হাইকোর্টের রুল লিভিংস্টন কাউন্টিতে বিমান বিধ্বস্ত, পাইলট গুরুতর আহত উদযাপনের রঙে ভেসে উঠল হ্যামট্রাম্যাক ট্রয়ে রেস্তোরাঁর বাইরে ছুরিকাঘাত, সন্দেহভাজনকে খুঁজছে পুলিশ পন্টিয়াকে সড়ক দুর্ঘটনায় এক পরিবারের তিনজন নিহত নেত্রকোনায় দু’পক্ষের সংঘর্ষ, সাবেক ইউপি সদস্যসহ নিহত ২ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রী হেনস্তাকে কেন্দ্র করে তুমুল সংঘর্ষ, আহত অন্তত ৬০ সার্বিক পরিস্থিতিতে জরুরি বৈঠকে পুলিশ কর্মকর্তারা হ্যামট্রাম্যাকে গুলিতে দুইজন নিহত

সারাদেশে বর্ণিল আয়োজনে বাংলা নববর্ষকে বরণ

  • আপলোড সময় : ১৪-০৪-২০২৩ ০৮:৫১:৫৭ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১৪-০৪-২০২৩ ০৮:৫১:৫৭ পূর্বাহ্ন
সারাদেশে বর্ণিল আয়োজনে বাংলা নববর্ষকে বরণ
ঢাকা, ১৪ এপ্রিল : পহেলা বৈশাখে এবার বর্ণিল উৎসবে মেতেছে দেশ। নতুন বাংলা বর্ষের প্রথম দিনের ভোরের আলো রাঙিয়ে দেয় নতুন স্বপ্ন, প্রত্যাশা আর সম্ভাবনাকে। রাজধানীসহ সারা দেশেই ছিল বর্ষবরণের নানা আয়োজন।  বাংলা বর্ষপঞ্জিতে আজ যুক্ত হয়েছে নতুন বাংলা বর্ষ ১৪৩০।
আনন্দঘন পরিবেশে নব আনন্দে বরণ করে নেয়া হয় নতুন বছরকে। কল্যাণ ও নতুন জীবনের প্রতীক হলো নববর্ষ। অতীতের ভুলত্রুটি ও ব্যর্থতার গ্লানি ভুলে নতুন করে সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনায় উদযাপিত হয় নববর্ষ।  জীর্ণ পুরাতন সবকিছু ভেসে যাক, ‘মুছে যাক গ্লানি’ এ আহ্বান জানায় বাঙালি।
‘বাংলা নববর্ষ ১৪৩০’ জাঁকজমকপূর্ণভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে এবার জাতীয় পর্যায়ে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করে। ছায়ানট ভোরে রমনা বটমূলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগ দিনব্যাপী বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দিবসটি উদযাপন করেছে। ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠীসহ অন্যান্য সাংস্কৃতিক সংগঠন যথাযোগ্য মর্যাদায় বাংলা নববর্ষ উদযাপন করেছে। বাংলা নববর্ষের অনুষ্ঠান জাতীয় সংগীত ও ‘এসো হে বৈশাখ গান’ পরিবেশনের মাধ্যমে শুরু হয়। বাংলা নববর্ষের তাৎপর্য এবং মঙ্গল শোভাযাত্রার ইতিহাস ও ইউনেস্কো কর্তৃক এটিকে বিশ্ব সংস্কৃতির ঐতিহ্য হিসাবে অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি তুলে ধরে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও বাংলা একাডেমির উদ্যোগে বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হয়েছে। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে। বাংলা নববর্ষে সকল কারাগার, হাসপাতাল ও শিশু পরিবারে (এতিমখানা) উন্নতমানের ঐতিহ্যবাহী বাঙালি খাবার ও ইফতারের আয়োজন করা হয়েছে। এবার দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে বাধ্যতামূলকভাবে বাংলা নববর্ষ উদযাপনের নির্দেশনা দিয়েছে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ।
সকাল ৯টায় শোভাযাত্রাটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের  (ঢাবি) চারুকলা থেকে শুরু হয়। শোভাযাত্রাটি শাহবাগ মোড় ঘুরে আবারও একই স্থানে গিয়ে শেষ হয়। শোভাযাত্রায় আবহমান বাংলার ইতিহাস-ঐতিহ্যের সঙ্গে সাম্প্রতিক ঘটনা প্রবাহের প্রতীকী উপস্থাপনের নানা বিষয় স্থান পেয়েছে।
উৎসবপ্রিয় বাঙালির প্রাণের উৎসব বাংলা বর্ষবরণের প্রধান অনুষঙ্গ মঙ্গল শোভাযাত্রা। এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রতিপাদ্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গান থেকে নেওয়া-‘বরিষ ধরা মাঝে শান্তির বারি।’ সকালে শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান। শোভাযাত্রায় সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন স্তরের মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিয়েছেন। কঠোর নিরাপত্তার চাদরে মোড়ানো ছিল পুরো এলাকা।
শোভাযাত্রায় এবার স্থান পেয়েছে পাঁচটি মোটিফ। মোটিফ পাঁচটি হলো- টেপা পুতুল, ময়ুর, নীল গাই, হাতি ও বাঘ। এছাড়াও শোভাযাত্রায় অংশ গ্রহণকারীদের হাতে ছিল বিভিন্ন আকৃতির মুখোশ। চারুকলা থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রা শুরু হওয়ার পর ঢোলের তালে তালে নাচতে শুরু করেন অংশগ্রহণকারীরা। অনেকেই রাস্তার দু’পাশে দাঁড়িয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রা উপভোগ করেন। বিদেশি নাগরিকদেরও শোভাযাত্রায় অংশ নিতে দেখা গেছে। তারাও সেজেছেন বাঙালি সাজে। পরে শোভাযাত্রায় প্রদর্শিত শিল্পবস্তু নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে যাওয়ার পর ঢাকের তালে উচ্ছ্বাসে মাতেন শিক্ষার্থীরা।
রমনার বটমূলে ভোর সোয়া ৬টায় আহির ভৈরব সুরে শুরু হয় ছায়ানটের অনুষ্ঠান। সবশেষে জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে সমাপ্তি ঘটে। এতে ছায়ানটের শিল্পীদের পাশাপাশি অংশ নিয়েছেন অন্য শিল্পীরাও। রবীন্দ্র-নজরুলের গানের সঙ্গে জায়গা করে নিয়েছে লোকজ সুরও।
দুই ঘণ্টাব্যাপী এ অনুষ্ঠানে শিল্পীদের পরিবেশনায় গানগুলোর মধ্যে ছিল-‘মনমোহন গহন যামিনী’, ‘রাত্রি এসে যেথায় মেশে’, ‘মোরে ডাকি লয়ে যাও’, ‘অন্তরে তুমি আছো চিরদিন’, ‘সংকটের বিহ্বলতা’, ‘আমাদের নানান মতে’, ‘মন মজালে ওরে বাউলা গান’, ‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি’, ‘এমন মানব সমাজ কোনদিন গো সৃজন হবে’, ‘মানুষ ধরো মানুষ ভজো’, ‘আগে কী সুন্দর দিন কাটাইতাম’ ইত্যাদি।
এবারের আয়োজনে ছায়ানটের পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্য পেশ করেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক লাইসা আহমদ লিসা। অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে তিনি মঞ্চে উঠে সম্প্রীতির বার্তা ও নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান। বাংলা নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে দেশের সকল জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়নে বৈশাখী র‌্যালি আয়োজন করে। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি আয়োজন করে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার। বাংলা একাডেমি এবং বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক)  বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে এবং বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন ফাউন্ডেশন প্রাঙ্গণে নববর্ষ মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করে। সকল সরকারি-বেসরকারি টিভি, বাংলাদেশ বেতার, এফএম ও কমিউনিটি রেডিও বাংলা নববর্ষের অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার এবং বাংলা নববর্ষের ওপর বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করে। বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার ও বেসরকারি চ্যানেলসমূহ রমনা বটমূলে ছায়ানট আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচার করেছে।
পহেলা বৈশাখ আমাদের সকল সঙ্কীর্ণতা, কুপমুণ্ডকতা পরিহার করে উদারনৈতিক জীবন-ব্যবস্থা গড়তে উদ্বুদ্ধ করে। আমাদের মনের ভিতরের সকল ক্লেদ, জীর্ণতা দূর করে আমাদের নতুন উদ্যমে বাঁচার অনুপ্রেরণা দেয়। আমরা যে বাঙালি, বিশ্বের বুকে এক গর্বিত জাতি, পয়লা বৈশাখের বর্ষবরণে আমাদের মধ্যে এই স্বাজাত্যবোধ এবং বাঙালিয়ানা নতুন করে প্রাণ পায়, উজ্জীবিত হয়। অন্য দিকে পহেলা বৈশাখ বাঙালির একটি সার্বজনীন লোকউৎসব। এদিন আনন্দঘন পরিবেশে বরণ করে নেওয়া হয় নতুন বছরকে। কল্যাণ ও নতুন জীবনের প্রতীক হলো নববর্ষ। অতীতের ভুলত্রুটি ও ব্যর্থতার গ্লানি ভুলে নতুন করে সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনায় উদযাপিত হয় নববর্ষ।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Suprobhat Michigan

কমেন্ট বক্স
একটি মহল নির্বাচন বানচাল করতে চায় : সৈয়দ মো. ফয়সল

একটি মহল নির্বাচন বানচাল করতে চায় : সৈয়দ মো. ফয়সল