প্রেমের ফাঁদে ফেলে দক্ষিণ আফ্রিকা প্রবাসীর প্রতারণা
-
আপলোড সময় :
০১-১০-২০২৪ ১২:৩৯:২১ অপরাহ্ন
-
আপডেট সময় :
০১-১০-২০২৪ ১২:৩৯:২১ অপরাহ্ন
হবিগঞ্জ, ১ অক্টোবর : জীবিকার তাগিদে জর্ডানে গিয়ে মাদাসার চাকুরী নিয়েছিলেন সুমনা আক্তার। ভালই চলছিল তার দিনকাল। এরই মাঝে ফেইসবুকে তার পরিচয় হয় দক্ষিণ আফ্রিকা প্রবাসী মৌলভীবাজার সদর উপজেলার বড়হাট গ্রামের শফিকুর রহমান সফিক এর ছেলে তৌফিকুল ইসলাম বিপ্লবের সাথে। এক পর্যায়ে তাদের মাঝে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে তৌফিকুল ইসলাম বিপ্লবের আহবানে দেশে ফিরে আসে সুমনা আক্তার।
দেশে আসার পর ১০ লাখ টাকা দেনমোহরে টেলিফোনে বিয়ে হয় তাদের। বিপ্লবের বাড়ীতে টিউবওয়েল বসানো আর রংয়ের কাজের জন্য ১ লাখ টাকা দেন সুমনা। কিছুদিন পর সফিক ভিসা দিয়ে তাকে নিয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকায়। একটি ঘরে বন্দি করে শুরু করে নির্যাতন। বন্দি অবস্থায় সংসার করতে গিয়ে কণ্যা সন্তানের জন্ম হয় এক।
সুমনা আক্তারের ছোট ভাই লুৎফুর রহমানকে দক্ষিণ আফ্রিকার ভিসা দিবে বলে হাতিয়ে নেয় আরও ১২ লাখ টাকা। পরে সে নির্যাতন করে স্ত্রী ও সন্তানকে দেশে পাঠিয়ে আরেক নারীর সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলে। আর দেশে সুমনা আক্তার শিশু সন্তানকে নিয়ে অসহায় হয়ে বিচারের আশায় আদালতের আশ্রয় নিয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে হবিগঞ্জ সদর উপজেলার আটঘরিয়া গ্রামের কাজল মিয়ার মেয়ে সুমনা আক্তার এই তথ্য তুলে ধরে।
সুমনা আক্তার বলেন, দরিদ্র পরিবারে জন্মহলেও আমি লেখাপড়া করে ২০১২ সালে জর্ডান যাই। সেখানে আমি একটি মাদ্রাসায় দপ্তরীর চাকুরী করে সুন্দরভাবেই জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলাম। ২০১৮ সালে ফেইসবুকের মাধ্যমে আমার পরিচয় হয় দক্ষিণ আফ্রিকার ডারবান ভিক্টোরিয়া স্টেইটে বসবাসকারী তৌফিকুল ইসলাম সৌরভের সাথে। তৌফিকুল ইসলাম সৌরভ আমার নামে ভূয়া ম্যারিজ সার্টিফিকেট তৈরি করে আমার নামে ভিসা বের করে আমাকে ২০২২ সালের ১৮ জানুয়ারী দক্ষিণ আফ্রিকায় নিয়ে যায়।
অনেকবার অনুরোধ করার পরও সে কাবিন রেজিস্ট্রি করেনি। সে আমার উপর তার অত্যাচার চলতে থাকে। একদিন সে আমাকে গুরুতরভাবে আঘাত করে আমার একটি দাত ভেঙ্গে দেয়। আমার কোমড়সহ শরীরের বিভিন্নস্থানে সে গুরুতর জখম করলেও আমি বন্দি অবস্থায় থাকায় কাউকে কিছু বলতে পারিনি।
তৌফিকুল ইসলাম কৌশলে আমার স্বর্ণালংকারসহ বিভিন্ন জিনিস হাতিয়ে নিতে থাকে। একদিন সে আমাকে কিছু না জানিয়ে আমার শিশুসন্তানসহ ঘর থেকে বের করে নিয়ে ২০২৩ সালের ৩ ফেব্রুয়ারী তারিখে বিমানবন্দরে নিয়ে আমাকে কৌশলে দেশে প্রেরণ করে। দেশে আসার পার তার সাথে বার বার যোগাযোগ করলেও সে আমার সাথে খারাপ আচরণ করতে
থাকে। আমি ও আমার সন্তানের কোন ভরণ পোষন দেয়নি। এমনকি আমার ভাইকে দক্ষিণ আফ্রিকা নিয়ে যাবে বলে যে ১২ লাখ টাকা নিয়েছিল তা ফেরত দিতে বললেও সে সেই টাকা ফেরত না দিয়ে টালবাহনা করতে থাকে। পরে আমি খবর নিয়ে জানতে পারি সে আমার মতই প্রতারণা করে আরেক নারীকে টেলিফোনে বিয়ে করে তাকে নেয়ার চেষ্টা করছে। এভাবে সে নিরিহ লোকজনকে প্রলোভন দিয়ে প্রতারণা করে সর্বশান্ত করে আসছে। আমি
আমার শ্বশুরবাড়ীতে গেলে আমার শাশুড়ী হামিদা বেগম ও স্বামীর বোনেরা আমার সাথে খারাপ আচরণ করে। আমার দরিদ্র পিতার বাড়ীতে শিশু সন্তানকে নিয়ে অতিকষ্ঠে দিনাতিপাত করিতেছি। আমার এখন মৃত্যুছাড়া আর কোন উপায় নেই।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Suprobhat Michigan
কমেন্ট বক্স