ওয়ারেন, ২ অক্টোবর : সাঈদ আহমেদ একজন বাংলাদেশি- আমেরিকান ক্রিকেটার। ১৬ বছর বয়সে বাবা-মার সাথে অভিবাসী হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন।পড়াশোনার পাশাপাশি চালিয়ে যান ক্রিকেট খেলা। দীর্ঘ বছর ক্রিকেটের সাথে সম্পৃক্ত থাকার পর আসে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ।
২০২৪ সাল অর্থাৎ এ বছরের আগষ্ট- সেপ্টেম্বর মাসের লেবার ডে তে অনুষ্ঠিত হলো ইউএসএ অনূর্ধ্ব- ১৯ দলের ক্রিকেট কনফারেন্স চ্যাম্পিয়নশিপ টুর্নামেন্ট। ১৬ দলের অংশগ্রহণে মিশিগানে স্ট্যাটের কোচিং এ দায়িত্ব পান বাংলাদেশি- আমেরিকান ক্রিকেটার সাঈদ আহমেদ। এই সংবাদটি দ্রতই ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। সহকর্মী ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের কাছ থেকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা বার্তা পেতে থাকেন।
বিপিএলের সিলেট স্ট্রাইকার্স এর পরিচালক জগলুল হুদা মিটু লিখেন, প্রিয় সাঈদ আহমেদ,আপনার এই অর্জনে খুবই আনন্দিত এবং বাংলাদেশি- আমেরিকান হিসেবে খুবই গর্বিত। আপনাকে অভিনন্দন।
বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক ফাস্ট বোলার এবং ইউএসএ ক্রিকেট বোর্ডের অপারেশন মেম্বার গোলাম নওশের প্রিন্স বলেন, ইউএসএ ক্রিকেট কোচিং এ বাংলাদেশি- আমেরিকান সাঈদ আহমেদের যুক্ত হওয়াটা আসলেই আনন্দের। ইউএসএ ক্রিকেটের উন্নতির জন্য সে যেন আরো ভাল কিছু করতে পারে, ওর জন্য দোয়া ও ভালবাসা রইল।
ক্রিকেটার সাঈদ আহমেদ এর কথা হয় দীর্ঘ সময়। তিনি জানান,অভিবাসী হয়ে এদেশে আসার পর পড়াশোনার পাশাপাশি ২০০৪ সালে মিশিগানের হ্যামট্রামেক সিটির স্কুলের পার্কিং লটে আমরা ৬-৭ জন বন্ধুরা মিলে ক্রিকেট খেলা শুরু করি। ২০১৩ সালে হ্যামট্রাম্যাক সিটির সাবেক কাউন্সিলর এনাম মিয়া ও নাজেল হুদার সহযোগিতায় সিটির মেমোরিয়াল পার্কের মাঠে ক্রিকেট খেলার জায়গা বন্দোবস্ত হয়। এখান থেকে প্রথমে মাঠে শুরু করি খেলা।
তারপর ২০১৭ সালের ডেট্রয়েট সিটির বাংলা টাউনের লাস্কী ক্রিকেট মাঠ ও জেইন ফিল্ডে ২ টা ক্রিকেট গ্রাউন্ডের জন্য সিটি প্রশাসনের কাছে আবেদন করি। সিটি কাউন্সিলর স্কাট বেনসনের সার্বিক সহযোগিতায় ডেট্রয়েট সিটির বর্তমান মেয়র মাইক ডুগান ২০১৭ সালের ৫ আগষ্ট আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন। এরপর থেকেই আমরা স্বাচ্ছন্দে ক্রিকেট খেলা চালিয়ে যেতে পারছি।
দীর্ঘ পরিক্রমায় এখন পর্যন্ত বাংলাদেশি-আমেরিকানদের দ্বারা ১৪ টি টিমের অংশগ্রহণে প্রতি বছর এই ২ মাঠে ক্রিকেট টুর্নামেন্ট অনুষ্টিত হয়। প্রতিটি দলেই বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক তারকা ক্রিকেটাররা অংশগ্রহণ করেন।
তিনি আরো বলেন,যেহেতু আমি ক্রিকেটের সাথে সম্পৃক্ত তাই আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য কিছু করার তাগিদে ২০১৭ সালে কোচিং এর জন্য "ক্রিকেট একাডেমি অফ ডেট্রয়েট" নামে একটা সেন্টার তৈরী খুলি। এখান থেকে আমার কোচিং এর যাত্রা শুরু।
কোচিং এ ইউএসএ ক্রিকেটে সম্পৃক্ততার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি সত্যিকার অর্থেই খুব আনন্দিত। আমার বহু বছরের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটেছে এই অর্জনে। বাংলাদেশি- আমেরিকান হিসেবে খুবই গর্ববোধ করছি। আমি চেষ্টা করছি আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম যাতে ইউএসএ ক্রিকেটে প্রতিনিধিত্ব করতে পারে। সবার কাছে দোয়া চাই যাতে ইউএসএ ক্রিকেটের মাধ্যমে বাংলাদেশি আমেরিকানদের গৌরবান্বিত করতে পারি।
সিলেট শহরের বালুচরে বড় হলেও বাবা বাবুল আহমেদ বাচ্চু ও মা সাফিয়া বেগমের ২ ছেলে ও ২ মেয়ে। তাদের বড় সন্তান সাঈদ আহমেদ। গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার কাতিয়া গ্রামে। সন্তানের এই অর্জনে পরিবারের সবাই আনন্দিত।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Suprobhat Michigan