আটলান্টিক সিটি, ১৬ অক্টোবর : নিউজার্সি রাজ্যের সাউথ জার্সিতে জাগরনী কালচারাল সোসাইটি ইনক এর উদ্যোগে গত ১৪ ও ১৫ অক্টোবর ৫৭১, দক্ষিন পোমনা রোডে অবস্থিত হিন্দু জৈন মন্দিরে প্রাণের আমেজে শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপিত হয়েছে।
দুর্গাপূজার বিভিন্ন আয়োজনের মধ্যে ছিল পূজার্চনা, আরতি, সংগীত রজনী, সিঁদুর খেলা ও মহাপ্রসাদ বিতরণ। আবালবৃদ্ধবনিতার পূজার বাহারি সাজ ও নয়নাভিরাম পোশাক-আশাকে দুর্গোৎসব প্রাঙ্গণ হয়ে উঠেছিল উৎসবের রঙে রঙীন। অনুকূল আবহাওয়ায় প্রবাসী হিন্দুদের সব পথ এসে যেন মিশে ছিল মন্দির প্রাঙ্গণে।
পুরাণে দেবী দুর্গার আবির্ভাব তত্ত্বে বলা হয়েছে, সমাজের সব অশুভ শক্তির বিনাশে দেবী দুর্গার মর্ত্যে আবির্ভাব। ত্রেতাযুগে অসুর কুলের দাপটে মানবজাতি যখন উৎকণ্ঠিত তখন মানব কল্যাণে এই ধরাধামে আবির্ভূত হন ভগবান শ্রী রামচন্দ্র। তিনি পিতৃ আদেশে বনবাসে থাকাকালে লঙ্কেশর রাবণ তাঁর স্ত্রী সীতাকে অপহরণ করে লঙ্কায় লুকিয়ে রাখেন। লঙ্কাপুরি থেকে প্রিয়তমা স্ত্রী সীতাকে উদ্ধারের জন্য শক্তি সঞ্চয়ের উদ্দেশ্যে শ্রী রামচন্দ্র শরৎকালে দেবী দুর্গাকে মর্ত্যে আহ্বান করেন।
বসন্তকালের পরিবর্তে শরৎকালে দেবী দুর্গাকে আহ্বান করায় এই পূজাকে ‘অকালবোধন’ বলা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতেই শরৎকালে দুর্গাপূজার প্রচলন হয়। সনাতনী হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের বিশ্বাস, অসুর শক্তি বিনাশকারী দেবী দুর্গার আরাধনার মধ্য দিয়ে সমাজ থেকে সব পাপ দূর হয়ে যাবে, সমাজে ফিরে আসবে শান্তি।
গত ১৫ অক্টোবর, মংগলবার রাতে সংগীত রজনীতে সংগীত পরিবেশন করেন জি বাংলার সারেগামাপা খ্যাত সংগীত শিল্পী দীপ চ্যাটার্জি। তাঁর মনোজ্ঞ পরিবেশনা দুর্গোৎসবে উপস্থিত সুধীজনরা প্রাণভরে উপভোগ করেন। এছাড়া জয়া চৌধুরী নৃত্য পরিবেশন করেন। পুজোর প্রথম দিন আয়োজক সংগঠনের শিল্পীদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
দুর্গাপুজোয় উপস্থিত প্রবাসী হিন্দুদের অনেকেই বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থিনে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর হামলা ও নির্যাতনের তীব্র নিন্দা জানান এবং তাদের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। দুর্গাপূজার এই দুই দিন প্রবাসী হিন্দুরা মেতে ছিলেন অনাবিল আনন্দে। আনন্দলোকের মঙ্গলালোকে অন্যরকম অনুভূতি আর ভিন্নতর ভালোবাসায় উদ্বেলিত হোক সব প্রবাসী হিন্দুর মনপ্রাণ- এ ছিল সবার অন্তরের কামনা।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Suprobhat Michigan