মাধবপুর, (হবিগঞ্জ) ২০ নভেম্বর : প্রতি বুধবার এলেই চা বাগানে উৎসবের আমেজ বিরাজ করত। বিকেল হলেই চা বাগানের শ্রমিকরা লাইন ধরে তাদের সাপ্তাহিক রেশন ও তলব নিয়ে যেত। সেই টাকা দিয়ে বাগানের বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিষপত্র ক্রয় করতেন। এতে করে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা তাদের দোকানের প্রচুর মালামাল বিক্রয় করতেন। এতে এলাকার ব্যবসা বাণিজ্য ছিল চাঙ্গা। কিন্তু ৩মাস ধরে মাধবপুরে উপজেলার সরকার মালিকাধীন পরিচালিত তেলিয়াপাড়া, জগদীশপুর চা বাগান সহ ১২ টি বাগানে রেশন তলব বন্ধ রয়েছে। ন্যাশনাল টি কোম্পানি( এনটিসি) আর্থিক সংকট থাকায় তিন মাস ধরে শ্রমিকদের রেশন তলব (মজুরি) দিতে না পারায় এখন করুনদশা চলছে প্রতিটি বাগানে। গত আগস্ট থেকে কোম্পানির তহবিলে অর্থের সংকট দেখা দেওয়ায় কর্তৃপক্ষ চা শ্রমিকের তলব রেশন সহ যাবতীয় ব্যয়ভার বহন করতে ব্যর্থ হয়। এক পর্যায়ে কর্তৃপক্ষ বাগান বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়।
গত ৩ মাস ধরে বাগানের সকল কর্মকাণ্ড বন্ধ হয়ে পড়েছে। রেশন তলব না পেয়ে শ্রমিক পরিবারে দেখা দিয়েছে তীব্র অভাব অন্টন। এর প্রভাব পড়েছে স্থানীয় ব্যবসা বাণিজ্যে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, চা বাগানে প্রতি সপ্তাহে শ্রমিক, কর্মচারীদের কয়েক লাখ টাকা নগদে পরিশোধ করা হত। ওই টাকা দিয়ে তারা নিত্য প্রয়োজনীয় সব মালামাল ক্রয় করতো। এতে স্থানীয়ভাবে অর্থনীতি চাকা সচল ছিল। এখন হাজারো শ্রমিক পরিবারের হাত শূণ্য। ব্যবসায়ীরা হাত গুটিয়ে বসে আছে। বাগান চালু থাকলে সব পেশার মানুষের উপকার হত। তেলিয়াপাড়া নোয়াহাটি বাজারের মাছ ব্যবসায়ী সুবোধ বিশ্বাস বলেন, আগে প্রতিদিন সকালে বাগানের অনেক মানুষ বাজারে কেনাবেচা করতেন ।এখন তাদের স্রোত কমে গেছে। জগদীশপুর চা বাগানের শ্রমিক মিঠুন ঋষি বলেন, বাগান বন্ধ হয়ে পড়ায় শ্রমিক পরিবার গুলো মানবেতর জীবন যাপন করছে। চা বাগানের শ্রমিক নির্ভর স্থানীয় ব্যবসায়ীদের বেচা কেনায় স্তবিরতা দেখা দিয়ে বিপদে পড়েছেন। সরকার জরুরীভাবে এ সমস্যা সমাধান না করলে কয়েক হাজার মানুষের জীবন আরো কঠিন সমস্যার মধ্যে পড়বে।এ নটিসি মহাব্যবস্থাপক এমদাদুল হক বলেন, এনটিসি এর আগে এমন সংকটে পড়েনি। সংকট কাটিয়ে উঠতে কর্তৃপক্ষ আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে। বাগান চালু থাকলে এর অর্থনৈতিক গতি প্রবাহ চলতে থাকে। এখন বাগান বাগান বন্ধ থাকায় শ্রমিক কর্মচারী, ব্যবসায়ী সহ সবাইকে বেগ পেতে হচ্ছে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Suprobhat Michigan