ওয়ারেন, ২৮ নভেম্বর : বাংলাদেশে হিন্দু ধর্মীয় নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ভারতের কংগ্রেস নেতা সোনিয়া গান্ধী। প্রতিবেশী দেশটিতে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নিপীড়ন বন্ধে ভারত সরকারে তৎপরতাও চেয়েছেন তিনি। এদিকে বাংলাদেশ লাগোয়া পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলাদেশের হিন্দুদের বিষয়ে যা করার, সেই ভার কেন্দ্রীয় সরকারকেই দিচ্ছেন।
বাংলাদেশে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নিপীড়ন বন্ধের দাবিকে সমাবেশ করে আলোচনায় আসা চিন্ময় রাষ্ট্রদ্রোহের একটি মামলায় এখন কারাগারে রয়েছেন। চট্টগ্রামের হাটহাজারীর পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় ইসকনের নেতা ছিলেন। তিনি এখন ‘বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট’র মুখপাত্র।
চিন্ময়কে গ্রেপ্তার ও বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর সহিংসতার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বুধবার সোশাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স এ একটি পোস্ট দেন সোনিয়া। তিনি বলেন, “বাংলাদেশে ইসকন মন্দিরের সাধুর গ্রেপ্তার এবং সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর চলমান সহিংসতা অত্যন্ত উদ্বেগের।” ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারকে এ বিষয়ে হস্তক্ষেপের আহ্বান জানিয়ে লোকসভায় বিরোধীদলীয় সদস্য প্রিয়াঙ্কা বলেন, “বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের বিষয়টি দেশটির সরকারের কাছে জোরালোভাবে তোলা উচিৎ। এ বিষয়ে ভারত সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।”
দিল্লির সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালও এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেন, “পুরো দেশ সাধু চিন্ময় কৃষ্ণ দাসজীর প্রতি সংহতি জানাচ্ছে, যাকে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। চিন্ময় দাসকে মুক্তি দিতে কেন্দ্রীয় সরকারকে দ্রুত হস্তক্ষেপের আহ্বান জানাচ্ছি।” চিন্ময়কে গ্রেপ্তারের পরপরই ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিবৃতি দিয়েছিল। সেখানে চিন্ময়ের মুক্তির পাশাপাশি ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার দাবি জানানো হয়।
চিন্ময়ের গ্রেপ্তার নিয়ে সবচেয়ে সরব ভারতের কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপির পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের নেতারা। রাজ্য বিধান সভার বিজেপির সদস্যরা মঙ্গলবার কলকাতায় বিক্ষোভ করে। বিধান সভার বিরোধীদলীয় নেতা শুভেন্দু অধিকারী বাংলাদেশ সীমান্ত অবরোধেরও হুমকি দেন। বিরোধীরা যখন সরব, তখন তা নিয়ে রাজ্য সরকারের প্রতিক্রিয়া বৃহস্পতিবার সাংবাদিকরা জানতে চান পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। তিনি কৌশলী উত্তরে বলেন, “কোনও ধর্মের ওপর আঘাত আসুক আমি চাই না। “এখানে (কলকাতায়) ইসকনের যিনি আছেন, তার সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। এটা যেহেতু অন্য দেশের বিষয়, তাই কেন্দ্রীয় সরকারকেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। এই বিষয়ে আমরা কেন্দ্রীয় সরকারের পাশেই আছি।”
চিন্ময়কে গ্রেপ্তারের পর চট্টগ্রামে তার অনুসারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের মধ্যে একজন আইনজীবী নিহত হয়েছেন। ওই ঘটনা ধরে ইসকনকে বাংলাদেশে নিষিদ্ধের দাবিও উঠেছে। এদিকে ইসকন বাংলাদেশের নেতারা বৃহস্পতিবার ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করে জানায়, চিন্ময়কে তারা আগেই বহিষ্কার করেছেন, ফলে তার এখনকার কর্মকাণ্ডের দায় তারা নেবেন না।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Suprobhat Michigan