দায় স্বীকার করে নিষিদ্ধ সংগঠনের খুদে বার্তা
ঝিনাইদহে শীর্ষ চরমপন্থি নেতা হানিফসহ ৩ জনকে গুলি করে হত্যা
-
আপলোড সময় :
২২-০২-২০২৫ ০২:২৪:৪২ পূর্বাহ্ন
-
আপডেট সময় :
২২-০২-২০২৫ ০২:২৭:১৯ পূর্বাহ্ন
ঝিনাইদহ, ২২ ফেব্রুয়ারী : নিষিদ্ধ ঘোষিত রাজনৈতিক সংগঠন পুর্ববাংলার কমিউনিস্ট পার্টির কথিত সামরিক কমান্ডার হানিফ তার দুই সঙ্গীসহ খুন হয়েছেন। শুক্রবার রাতে প্রতিপক্ষ বন্দুকধারীরা তাদের হত্যা করে। খবর পেয়ে পুলিশ রাত সাড়ে ১২টার দিকে ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার ত্রিবেনী ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর শ্মশান ঘাট এলাকার একটি খালের পাশ থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করে। তিনজনের মাথায় গুলির চিহ্ন রয়েছে। পাশে দুইট মোটরসাইকেল ও নিহতদের ব্যবহৃত হেলমেট পড়ে ছিল। নিহতরা হলেন হরিণাকুণ্ডু উপজেলার আহাদনগর গ্রামের রাহাজ উদ্দীনের ছেলে শতাধিক হত্যা মামলার আসামি হানিফ আলী (৫২) ও তার শ্যালক শ্রীরামপুর গ্রামের উম্মাদ আলীর ছেলে লিটন (৩৫) ও কুষ্টিয়ার পিয়ারপুর গ্রামের আরজাদ আলীর ছেলে রাইসুল ইসলাম।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নিহত চরমপন্থি নেতা হানিফ মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামি ছিলেন। হরিণাকুন্ডু উপজেলার কুলবাড়িয়া গ্রামের আব্দুর রহমান হত্যা মামলায় তার ফাঁসি আদেশ হয়। উচ্চ আদালতেও ফাঁসির রায় বহাল থাকলে হাসিনা সরকারের সময় রাস্ট্রপতি আব্দুল হামিদের বিশেষ ক্ষমা নিয়ে হানিফ এলাকায় ফিরে আসেন এবং মৎস্যজীবী লীগের উপজেলা কমিটির সহ-সভাপতি নিযুক্ত হন। আওয়ামী লীগের প্রভাবে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করেন। হাসিনা সরকারের পতন হলে দুর্ধর্ষ হানিফ বিএনপির ছত্রছায়ায় ফিরে আসার চেষ্টা করেন।
শুক্রবার রাতে শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুম খান ঘটনা সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে আমরা তিনটা লাশ পেয়েছি। লাশ দেখে মনে হচ্ছে, গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে একজনের নাম হানিফ। তিনি পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির নেতা ছিলেন। অপরজন হানিফের শ্যালক লিটন। তবে বাকি একজনের পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি। ঘটনাস্থলে দুটি কালো রঙের পালসার মোটরসাইকেল, একটি ম্যাগাজিন ও গুলি পাওয়া গেছে। খবর পেয়ে ঝিনাইদহ পুলিশ সুপার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এদিকে হত্যার দায় স্বীকার করে জাসদ গণবাহিনীর জনৈক কালু পরিচয় দিয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে মোবাইল ফোনের যোগাযোগ মাধ্যমে বার্তা পাঠানো হয়েছে। হোয়াটসআপ বার্তায় দাবী করা হয় “এতদ্বারা ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, মাগুরা ,কুষ্টিয়াা,যশোর ও খুলনাবাসীর উদ্দেশ্যে জানানো যাইতেছে যে, পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টি নামধারী কুখ্যাত ডাকাত বাহিনীর শীর্ষ নেতা অসংখ্য খুন, গুম, দখলদারি, ডাকাতি, ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত হরিনাকুন্ডু নিবাসী মোঃ হানিফ তার দুই সহযোগীসহ জাসদ গণবাহিনীর সদস্যদের হাতে নিহত হয়েছেন। তাদের লাশ রামচন্দ্রপুর ও পিয়ারপুর ক্যানালের পাশে রাখা আছে। অত্র অঞ্চলের হানিফের সহযোগীদের শুধরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হলো অন্যথায় আপনাদের একই পরিণতির মুখোমুখি হতে হবে। কালু জাসদ গণবাহিনী।
এদিকে দীর্ঘদিন পর চরমপন্থিদের গুলির লড়াই ও গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে তার দায় স্বীকার করে বিবৃতি প্রদান জনমনে আতংকের সৃষ্টি হয়েছে। জানা গেছে, একই স্থানে ২০০৩ সালের ৫ ডিসেম্বর শৈলকুপার শেখপাড়া গ্রামের শহীদ খা, ত্রিবেনী গ্রামের শাহনেওয়াজ, একই গ্রামের ফারুক, নুরু কানা ও কুষ্টিয়ার ভবানীপুর গ্রামে কটাকে গুলি ও জবাই করে হত্যা সন্ত্রাসীরা। এই মামলায় ২০২৪ সালের ২৯ অক্টোবর কুষ্টিয়র আলী রেজা ওরফে কালু ও কুষ্টিয়া জেলার পিয়ারপুর গ্রামের মহসিন আলীকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করেন। ঝিনাইদহ জেলা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মোঃ জাকারীয়াহ এই রায় প্রদান করেন।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Suprobhat Michigan
কমেন্ট বক্স