নিউইয়র্ক, ৪ জুন :“ব্যক্ত হোক জীবনের জয়”—এই উদাত্ত প্রত্যয়ে নিউইয়র্কের সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘প্রকৃতি’ আয়োজনে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৪তম জন্মজয়ন্তী পালিত হয়েছে। গত ১ জুন অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠান পরিণত হয় এক অপূর্ব সুর, কবিতা ও দেশাত্মবোধে ভরা মিলনমেলায়।
জাতি, ধর্ম, ভাষা ও ভূগোলের সীমানা ছাড়িয়ে রবীন্দ্রচেতনার গভীর অনুরণনে মুখর ছিল সন্ধ্যাটি। শুরুতেই পরিবেশিত হয় কবিগুরুর কালজয়ী গান “হে নূতন”, যা দর্শক-শ্রোতাদের মনে আনে এক গভীর আবেগের স্পর্শ। এরপর মঙ্গলপ্রদীপ প্রজ্বালনের মাধ্যমে অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের অন্যতম উপদেষ্টা, বাকসু’র সাবেক জিএস ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. প্রদীপ রঞ্জন কর। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা তাজুল ইমাম, নাট্যশিল্পী লুৎফর নাহার লতা এবং সংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মিথুন আহমেদ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠক অনুপ বড়ুয়া।
পরিবেশনার ফাঁকে ফাঁকে উপস্থাপক হিসেবে কবি অসীম সাহা এবং সংস্কৃতিকর্মী নাজনীন সুমন তাঁদের সুললিত ভাষায় প্রতিটি পরিবেশনার ভাব, সৌন্দর্য ও প্রাসঙ্গিকতা তুলে ধরেন শ্রোতাদের সামনে।
একে একে মঞ্চে রবীন্দ্রসঙ্গীত পরিবেশন করেন নাসিমা শাহীন, দিঠি হাসনাত, মৌগন্ধা আচার্য্য, প্রসূন ঘোষ রায়, জলি কর, জয়ন্তী ভট্টাচার্য্য জয়া, মিনি কাদির, রূপালি ঘোষ, চন্দ্রিকা দে সেঁজুতি।
বিশেষভাবে পরিবেশিত “ও আমার দেশের মাটি” গানটি ছিল অনুষ্ঠানের আবেগঘন মুহূর্ত—বাংলার মাটি ও মানুষের প্রেমে উজ্জীবিত এই গান আজও জাতিসত্তার প্রতীক হয়ে বাঙালির হৃদয়ে বাজে। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৪তম জন্ম-জয়ন্তীতে অনুষ্ঠিত এক ব্যতিক্রমী অনুষ্ঠানে তাঁর স্বদেশ-ভাবনা, মানবতাবোধ ও মানবপ্রেম বিষয়ক গানগুলো প্রবাসীদের হৃদয় স্পর্শ করে। “ব্যক্ত হোক জীবনের জয়” শীর্ষক আয়োজনে সবকিছুকে ছাপিয়ে গিয়েছিল প্রবাসের জনপ্রিয় নৃত্যশিল্পী মাইশা ও মাহিমা কর্তৃক “ও আমার দেশের মাটি” গানের সাথে মনোমুগ্ধকর নৃত্য পরিবেশন।
উল্লেখ্য, এই গানটি অধিকার ও স্বাধিকার আন্দোলনের সময় রচিত এক অনন্য দেশাত্মবোধক রচনা, যা রাজনৈতিক ও আত্মিক প্রতিরোধের প্রতীক হয়ে ওঠে। আজও এটি ভারত-উপমহাদেশে জাতিসত্তার এক জ্বলন্ত প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Suprobhat Michigan