শান্তি খুব বেশি দূরে নয়, এটি কেবল একটি চিন্তার দূরত্বে। তবুও আজ, দুঃখে ভারাক্রান্ত এই পৃথিবী। প্রতিটি হৃদয় যেন এক নীরব বোঝা বয়ে বেড়ায়। আমরা ইতিহাসের এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছি। তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের স্ফুলিঙ্গ যেন বাতাসে ভেসে বেড়ায়। এখন দোষারোপ, বিভক্ত বা ধ্বংস করার সময় নয়। এখন প্রয়োজন সাহস, সহানুভূতি, এবং গভীর সচেতনতা। সমস্যা সৃষ্টি করা সহজ, কিন্তু সমাধান খোঁজে বুদ্ধি, ধৈর্য ও বিবেক।
ধ্বংসাত্মক প্রতিযোগিতায় ডুবে থাকলে, ফিরে আসে শুধু ছাই আর নীরব কান্না। আসুন, ঐক্য ও দায়িত্ববোধে জাগি। আমাদের পবিত্র কর্তব্য, মানবতাকে রক্ষা করা, ধ্বংস নয়। শান্তির সূচনা ঘটে তখনই, যখন আমরা একে অপরকে বোঝার চেষ্টা করি। যেখানে বোঝাপড়ার আলো জ্বলে, সেখানে দোষারোপের অন্ধকার মুছে যায়।
আমরা যদি মন খুলে শুনতে শিখি, যদি কণ্ঠস্বরকে নয়, মনোযোগকে গুরুত্ব দিই, তবেই বোঝাপড়ার পথ খুলে যায়। মানুষকে শত্রু হিসেবে নয়, ভাই বোন আত্মীয় হিসেবে দেখা এটাই মানবিকতার মূল শিক্ষা। বিভাজনের দৃষ্টিভঙ্গি নয়, সমবেদনার দৃষ্টিই পারে একটি সহনশীল সমাজ গঠন করতে।
যদি প্রতিটি মানুষ তার ভেতরের অস্থিরতা ও ক্রোধকে নিয়ন্ত্রণ করে একটুকু শান্তি গড়ে তোলে, তাহলে সেই ছোট ছোট শান্তির স্রোত একত্রে রূপ নেবে বিশাল শান্তির সমুদ্রে। কারণ সত্যিকারের শান্তি কখনও বাইরের জগৎ থেকে আসে না; তা জন্ম নেয় আমাদের অন্তরে।
পেছনের যুদ্ধগুলো শান্তি বয়ে আনেনি, তারা এনেছে শুধু ক্ষত আর নীরবতা। তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ কোনো গৌরবের প্রতীক নয়, বরং বেদনার, এবং তারপর বিস্মৃতির। তাই আসুন, আমরা ভিন্ন এক পথ বেছে নিই। অস্ত্র নয়, আলিঙ্গন করি জ্ঞানকে। শান্তি, একটি দূরবর্তী আদর্শ নয়, বরং একটি তৎক্ষণাৎ সিদ্ধান্ত, একটি চিন্তা। কারণ শান্তি খুব বেশি দূরে নয়, প্রিয়। এটা কেবল একটি চিন্তাভাবনা দূরে।
লেখক: ড. দেবাশীষ মৃধা
বিশিষ্ট বিশিষ্ট নিউরোলজিস্ট ও দার্শনিক
নিউজটি আপডেট করেছেন : Suprobhat Michigan