ওয়েন কাউন্টি জুভেনাইল ডিটেনশন ফ্যাসিলিটিতে আটক দুই কিশোরের ওপর যৌন নির্যাতনের অভিযোগে বুধবার সাবেক কর্মচারী স্বেতলানা কুরিয়ানোয়াকে ছয় বছর থেকে সর্বোচ্চ ১৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত/Photo : Clarence Tabb Jr, The Detroit News
ডেট্রয়েট, ১৭ জুন : ওয়েইন কাউন্টি জুভেনাইল ডিটেনশন ফ্যাসিলিটির একজন প্রাক্তন কর্মচারী স্বেতলানা কুরিয়ানোয়াকে (৩৪) কেন্দ্রটিতে আটক দুই কিশোর ছেলের উপর যৌন নিপীড়নের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে সর্বোচ্চ ১৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেছে আদালত।
ওয়েইন কাউন্টি সার্কিট কোর্টের একটি জুরি ১৭ জুন কুরিয়ানোয়াকে দ্বিতীয়-ডিগ্রি অপরাধমূলক যৌন আচরণের দুটি পৃথক অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে। বিচারক শ্যানন ওয়াকার বুধবার তাকে প্রতিটি অভিযোগে ৭১ মাস থেকে ১৫ বছরের কারাদণ্ড দেন, যা একইসাথে কার্যকর হবে।
অভিযোগ অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ৮ এপ্রিল হ্যামট্র্যাম্যাকে অবস্থিত ওই জুভেনাইল ফ্যাসিলিটিতে ১৬ ও ১৭ বছর বয়সী দুই কিশোরকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন কুরিয়ানোয়া। ভুক্তভোগীদের একজন একজন থেরাপিস্টকে ঘটনাটি জানানোর পর তদন্ত শুরু হয়।
বিচার চলাকালীন, দুই কিশোর আদালতে সাক্ষ্য দেয় যে কুরিয়ানোয়া তাদের শর্টস খুলে ফেলে এবং যৌন নিপীড়ন চালায়। একজন কিশোর, যার বয়স বর্তমানে ১৮, বর্তমানে স্পেকট্রাম জুভেনাইল জাস্টিস সার্ভিসেসের অধীনে একটি আবাসিক চিকিৎসা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন।
ভুক্তভোগী কিশোর আদালতে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলেন, “ঘটনার পর নিজেকে আমি অদৃশ্য এবং মূল্যহীন মনে করেছি। আমার শান্তি, নিরাপত্তা এবং প্রাপ্তবয়স্কদের প্রতি আস্থা যেন কেউ ছিনিয়ে নিয়েছিল।” তিনি জানান, ঘটনার পর তিনি খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দেন, নিজেকে গুটিয়ে নেন এবং আচরণগত সমস্যা দেখা দেয়। র্যাপ গান লেখা তাকে মানসিকভাবে টিকে থাকতে সহায়তা করেছে।
অন্য কিশোর সাজা ঘোষণার সময় উপস্থিত না থাকলেও, প্রসিকিউশন জানায় যে সে এখনো থেরাপিস্টের সঙ্গে কথা বলতেও কষ্ট বোধ করে এবং মানসিকভাবে খুব বিপর্যস্ত।
আদালতে বিবৃতি দিতে অস্বীকৃতি জানান কুরিয়ানোয়া। তার আইনজীবী স্যাম বেনেট আদালতকে জানান, কুরিয়ানোয়া তার অসুস্থ বাবা-মা এবং বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুকন্যার দেখাশোনা করেন। বেনেট দাবি করেন, তার মক্কেল পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার এবং মেজাজ সংক্রান্ত সমস্যায় ভুগছেন এবং চিকিৎসাধীন আছেন। তিনি তার জন্য তিন বছরের ন্যূনতম সাজা চেয়েছিলেন। কিন্তু প্রসিকিউশন অফিসার এলিজাবেথ মুর আদালতকে অনুরোধ করেন যেন দোষীর বিরুদ্ধে কঠোর সাজা প্রদান করা হয়। “কুরিয়ানোয়া তার আস্থার অবস্থান ব্যবহার করে শিশুদের ক্ষতি করেছে,” বলেন মুর।
বিচারক ওয়াকার বলেন, “তোমার কাজ অমার্জনীয়। এটা স্পষ্ট, তুমি তোমার আস্থার সুযোগ নিয়েছো এবং শিশুদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছো।”
এই রায় একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যা প্রমাণ করে যে যারা শিশুদের রক্ষার দায়িত্বে থাকেন, তাদের যেকোনো ধরনের অনৈতিক আচরণের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করবে বিচার বিভাগ।
Source & Photo: http://detroitnews.com
নিউজটি আপডেট করেছেন : Suprobhat Michigan