শুক্রবার (১৮ জুলাই) সকাল থেকে শুরু হওয়া এই আয়োজনের যাত্রা শুরু হয় হবিগঞ্জের কালারডুবা নৌকাঘাট থেকে। এরপর মিঠামইন, আজমিরিগঞ্জ ও বানিয়াচংয়ের বিস্তৃত হাওর অঞ্চল এবং ঐতিহ্যবাহী বিথাঙ্গল বড় আখড়া ও ঐতিহাসিক দিল্লির আখড়ায় সফর করেন অংশগ্রহণকারীরা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শব্দকথা’র সম্পাদক ও প্রকাশক মনসুর আহমেদ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ফোরামের সাধারণ সম্পাদক আখতারুজ্জামান তরপদার। স্বাগত বক্তব্য দেন উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক হেলাল আহমেদ।
আয়োজনে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উদ্ভিদ গবেষক ও সহযোগী অধ্যাপক ড. সুভাষ চন্দ্র দেব, শব্দকথা’র নির্বাহী সম্পাদক ও যুক্তরাজ্যপ্রবাসী সোহেল আমীন, বিশিষ্ট সংগীতশিল্পী স্বদেশ দাশ, কবি নূরে আলম চৌধুরী এবং ত্রৈমাসিক শব্দকথা’র সহযোগী সম্পাদক কবি এস. এম. মিজান প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে ভাটি বাংলার ঐতিহ্যবাহী গান পরিবেশন করেন সংগীতশিল্পী গোপী মোহন দাস, হাবিব খোকন, শিরিন আক্তার সোনিয়া, পলক দাস, আসিফ, গুঞ্জন সূত্রধর, জগৎ সরকার, মৌ দাস, তুষ্টি রায়, পুষ্পিতা সূত্রধর ও অনুজিৎ চৌধুরী।

অনুষ্ঠানে ড. সুভাষ চন্দ্র দেব বলেন, "হবিগঞ্জের স্বপ্নবাজ তরুণ কবি মনসুর আহমেদের নেতৃত্বে শব্দকথার এই সৃজনশীল কর্মকাণ্ড তরুণ সমাজকে সাহিত্য ও সংস্কৃতির প্রতি আগ্রহী করছে। হাওর জীবনের প্রতি মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাতে ‘হাওর বিলাস’ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।"
ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে আগত কবি নূরে আলম চৌধুরী বলেন, "হবিগঞ্জ একটি সমৃদ্ধ জেলা। শব্দকথার আয়োজনে অংশ না নিলে এই ভাটি অঞ্চলের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস ও সংস্কৃতি সম্পর্কে জানা হতো না। এই অঞ্চল মুক্তিযুদ্ধ, সাহিত্য, সংগীতের সাহসিকতার এক মহা উপাখ্যান। এখানে জন্মেছেন স্যার ফজলে হাসান আবেদ, সুবীর নন্দী, সঞ্জীব চৌধুরী ও রামনাথ বিশ্বাসের মতো গুণীজন।"
কবি এস. এম. মিজান বলেন, "হাওরের জল, আকাশ ও নিসর্গ আমাদের হৃদয়কে ছুঁয়ে যায়। এই আয়োজন শুধু ভ্রমণ নয়, বরং প্রকৃতি, সাহিত্য ও ভালোবাসাকে উপলব্ধির এক মেলবন্ধন। শিশু থেকে বৃদ্ধ—সব বয়সী মানুষের অংশগ্রহণ প্রমাণ করে, এই উদ্যোগ সমাজে সাহিত্য ও সংস্কৃতির চর্চাকে আরও বেগবান করবে। পাশাপাশি আমাদের দায়িত্ব প্রকৃতিকে রক্ষা করা।"