হ্যামট্রাম্যাকের শিবা রেস্তোরাঁর পাশে অবস্থিত বিখ্যাত ইয়েমেন ম্যুরাল/Photo : Andy Morrison, The Detroit News
হ্যামট্রাম্যাক, ১৭ আগস্ট : হ্যামট্রাম্যাকের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত বিখ্যাত “ইয়েমেন ম্যুরাল” পুনর্নির্মাণের ঝুঁকিতে পড়ায় শহরের সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। সম্প্রদায় নেতারা ও স্থানীয় সংগঠনগুলো বলছে, এ শিল্পকর্ম শুধু একটি চিত্র নয়, বরং শহরের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য ও ইয়েমেনি সম্প্রদায়ের পরিচয়ের প্রতীক।
২০১৩ সালে চিলির শিল্পী দাসিক ফার্নান্দেজ এ ম্যুরালটি আঁকেন। দুই বছর ধরে চলা প্রকল্পটির ব্যয় হয়েছিল প্রায় ২০ হাজার ডলার। এতে ইয়েমেনের সোকোত্রা দ্বীপ, ড্রাগন ব্লাড ট্রি এবং ইসলামি শিল্প-স্থাপত্যের উল্লেখ রয়েছে। “চরম প্রান্তিকতার সময়ে হ্যামট্রাম্যাকের বেড়ে ওঠা ইয়েমেনি জনগোষ্ঠীকে উপস্থাপন করাই ছিল লক্ষ্য,” বলেন ওয়ানহ্যামট্রামকের প্রাক্তন নির্বাহী পরিচালক বিল মেয়ার, যিনি প্রকল্পটি শুরু করেছিলেন।
কিন্তু বর্তমানে ম্যুরালের পাশের খালি জমির মালিক সেখানে নতুন ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা করছেন। ২০২০ সালেও তিনি একই চেষ্টা করেছিলেন, তবে তখন সম্প্রদায়ের চাপের মুখে জমি ইসলামিক সেন্টারের কাছে লিজ দেওয়া হয় এবং পার্ক নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। পরে সেই পরিকল্পনা ভেস্তে যায় এবং জমির লিজ বাতিল হয়। ফলে আবারও ম্যুরালটি হুমকির মুখে।
ক্রিস্টোফার স্নাইডার, হ্যামট্রাম্যাকের শিল্প সংগঠন হ্যাচ আর্ট-এর পরিচালক, বলেন, “প্রতিটি সংস্কৃতির কিছু প্রতীক দরকার যা মানুষকে বলে, ‘এটি আমাকে প্রতিনিধিত্ব করে।’ এই ম্যুরাল সেই প্রতীক, যা হ্যামট্রাম্যাকের বহুসাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের উদযাপন।”
হ্যামট্রাম্যাক সিটি কাউন্সিলের সদস্য ও ইয়েমেনি বংশোদ্ভূত মোহাম্মদ আলসোমিরি, যিনি ম্যুরালসংলগ্ন ভবনের মালিক জানান, তিনি ম্যুরাল সংরক্ষণের পরিকল্পনা করছেন, যদিও বিস্তারিত দেননি।
শহরের মেয়র আমের গালিব বলেছেন, “ইয়েমেন ম্যুরাল ইয়েমেনি সম্প্রদায়ের সাংস্কৃতিক পরিচয়ের প্রতীক এবং এটি শহরকে প্রাণবন্ত করে তোলে। আমরা সংরক্ষণে চেষ্টা করছি, কিন্তু মালিককে তার জমিতে নির্মাণ থেকে আটকাতে পারি না। আশা করি আলোচনা করে সমাধান খুঁজে পাওয়া যাবে।”
মেয়রসহ অনেকেই মনে করেন, সমাধান হতে পারে মালিকের সাথে পুনরায় আলোচনা করে নতুন লিজ চুক্তি করা, জমি ইজারা নিতে অন্য কোনও সংস্থা খুঁজে বের করা, অথবা ম্যুরালটিকে ঐতিহাসিক ল্যান্ডমার্ক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া। বিকল্প না থাকলে উচ্চ-রেজোলিউশনের ছবি সংরক্ষণ ও শহরের চারপাশে ব্যানার আকারে প্রদর্শনের কথাও ভাবা হচ্ছে। “এটি শুধু ইয়েমেনিদের নয়, হ্যামট্রাম্যাকের সকল বাসিন্দাকে একত্রিত করে,” বলেন মেয়র। “এই শিল্পকর্ম আমাদের বহুসাংস্কৃতিক ঐক্যের প্রতীক। তাই এর সংরক্ষণ অত্যন্ত জরুরি।”
Source & Photo: http://detroitnews.com
নিউজটি আপডেট করেছেন : Suprobhat Michigan