ডেট্রয়েট, ২২ আগস্ট : ডেট্রয়েটের সাম্প্রতিক সহিংসতা ও একের পর এক কিশোরদের প্রাণঘাতী ঘটনায় কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে পুলিশ। বুধবার (২১ আগস্ট) পুলিশ প্রধান টড বেটিসন এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, শহরজুড়ে স্থানীয় ও ফেডারেল সংস্থার যৌথ উদ্যোগে ১১টি তল্লাশি চালানো হয়েছে, যেখানে বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র জব্দ ও কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
“আমি প্রতিশ্রুতি রক্ষাকারী, আর ডেট্রয়েটের রাস্তাকে অপরাধীদের হাত থেকে মুক্ত করতে আমি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ,” সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন পুলিশ প্রধান টড বেটিসন। তিনি বলেন, অভিযানে ৪০টিরও বেশি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছে, যেগুলোর মধ্যে রয়েছে উচ্চক্ষমতার এআর রাইফেল, অ্যাসল্ট রাইফেল, রিভলভার ও শটগান। এসব অস্ত্র ব্যালিস্টিক পরীক্ষার মাধ্যমে বিশ্লেষণ করে দেখা হবে, সেগুলো শহরের কোনো অপরাধে ব্যবহৃত হয়েছে কিনা।
তিনি জানান, কিশোরদের জড়িয়ে সাম্প্রতিক সহিংসতার অনেকটাই গ্যাং-সম্পর্কিত, এবং এ ঘটনায় কিছু গ্রেপ্তারও হয়েছে। তবে সম্প্রতি রিপাসে গুলি চালিয়ে একজন নিহত ও দুজন আহত হওয়ার ঘটনার সঙ্গে বুধবারের অভিযান সরাসরি যুক্ত কিনা—সে বিষয়ে মন্তব্য করেননি বেটিসন।
“অপরাধীরা জানে তারা কারা, আমরাও জানি তারা কারা। ফেডারেল সংস্থা, প্রসিকিউটর অফিস—সবাই জানে। তাদের অবশ্যই জবাবদিহির মুখোমুখি করা হবে,” দৃঢ় কণ্ঠে বলেন পুলিশ প্রধান।
এ অভিযানে সহায়তার জন্য তিনি মার্কিন অ্যাটর্নি জেরোম গর্গন, অ্যালকোহল-তামাক-অগ্নেয়াস্ত্র ব্যুরো (ATF), মিশিগান স্টেট পুলিশ, ওকল্যান্ড ও ওয়েইন কাউন্টি শেরিফ এবং স্থানীয় প্রসিকিউটর কিম ওয়ার্দিকে ধন্যবাদ জানান। পাশাপাশি নাগরিকদের দিক থেকেও পুলিশের কাছে আসা টিপস ও তথ্যকে তিনি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন।
এই গ্রীষ্মে ডেট্রয়েটে একাধিক চাঞ্চল্যকর সহিংস ঘটনা ঘটে, যেগুলোর বেশিরভাগেই কিশোর ও শিশু জড়িত ছিল। জুলাইয়ের শেষদিকে ড্রাইভ-বাই গুলিতে ঘুমন্ত দুই শিশু আহত হয়। কয়েকদিন আগে ৬ বছরের এক শিশু বাড়ির ভেতরে গুলিতে নিহত হয়। জুনের শেষে ডেনবি হাই স্কুলের কাছে গুলিতে ৪ বছরের এক শিশুসহ দুজন নিহত হয়। গত সপ্তাহে পূর্ব ডেট্রয়েটের এক অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সে বিরোধের জেরে চারজন গুলিবিদ্ধ হয়।
এই প্রেক্ষাপটে মেয়র মাইক ডুগান ও পুলিশ প্রধান বেটিসন একটি “পাঁচ ধাপের পরিকল্পনা” ঘোষণা করেছেন, যার মধ্যে রয়েছে কিশোরদের কারফিউ আইন কঠোরভাবে প্রয়োগ, অবৈধ বৃহৎ সমাবেশ ভাঙতে পুলিশের বিশেষ ইউনিটের কর্মঘণ্টা বাড়ানো ইত্যাদি।
এফবিআইয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ৫ লাখের বেশি জনসংখ্যার শহরগুলোর মধ্যে সহিংস অপরাধে ডেট্রয়েট দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে, শুধুমাত্র মেমফিসের পরেই। তবে আশার খবর হলো, ২০২১ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে শহরটিতে সহিংস অপরাধের হার ১৭% কমেছে। প্রতি এক লাখে অপরাধের হার যেখানে আগে ছিল ২,১৫৩, তা কমে দাঁড়িয়েছে ১,৭৮১।
Source & Photo: http://detroitnews.com
নিউজটি আপডেট করেছেন : Suprobhat Michigan