লাখাই, (হবিগঞ্জ) ৩০ অক্টোবর : হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার বিভিন্ন গ্রামীণ এলাকায় এখনও অবাধে ব্যবহৃত হচ্ছে খোলা ল্যাট্রিন। আধুনিক যুগেও এ ধরনের ল্যাট্রিন ব্যবহারে এলাকাবাসী নানা ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে। বিশেষ করে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী ও নিম্ন আয়ের মানুষগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, লাখাই উপজেলার ১ নং লাখাই ইউনিয়নের বাঙ্গালপাড়াহাটি, আয়নারটুক, ঋষিপাড়াসহ একাধিক স্থানে খোলা ল্যাট্রিন। অনেক স্থানে পানির মধ্যে মলমূত্র পড়ছে এবং একই পানি গোসল সহ নানাবিধ কাজে ব্যবহার করছে লোকজন।
লাখাই অনলাইন প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সূর্য রায় জানান, লাখাই উপজেলার অনেক গ্রামে এখনো শতভাগ স্যানিটেশন নিশ্চিত হয়নি। আর্থিক সংকট, সচেতনতার অভাব ও পর্যাপ্ত সরকারি সহায়তা না থাকায় অনেক পরিবার খোলা স্থানে বা অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করছে। এতে পানিবাহিত রোগ যেমন ডায়রিয়া, আমাশয়, টাইফয়েডসহ বিভিন্ন সংক্রামক রোগের ঝুঁকি বাড়ছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কাজী শামসুল আরেফীন জানান, আমরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসা রোগীদের স্বাস্থ্য বিষয়ক শিক্ষা ও সচেতনতার জন্য পরামর্শ প্রদান করছি। তাছাড়া ফিল্ডে স্বাস্থ্য সহকারী, কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে রোগীদের স্বাস্থ্য বিষয়ক পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আলাদাভাবে ক্যাম্প করে স্যানিটেশন বিষয়ক কোনো প্রোগ্রাম আমাদের নেই। তবে কেউ জনসচেতনতামূলক প্রোগ্রামের আয়োজন করলে আমি আমার লোকদের নিয়ে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করবো।
লাখাই উপজেলার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ সহকারী প্রকৌশলী মো. মুর্শিদ আলম বলেন, এখন কোনো প্রকল্প নেই, সামনে একটি প্রকল্প আসবে স্যানিটেশন নিয়ে। বর্তমানে বন্যা পরবর্তী পূন-নির্মান প্রকল্পের আওতায় দুইটা পাবলিক টয়লেট নির্মাণের কাজ আসছে।
কিছুদিন পূর্বে এনজিও প্রতিষ্ঠান আইডি বাংলাদেশের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা বানানো বিষয়ক একটি কর্মশালা হয়েছিল, বর্তমানে তাদের কার্যক্রম নেই। তবে এলাকাগুলো চিহ্নিত করে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি বা ইউএনও মহোদয়ের মাধ্যমে সেমিনারের আয়োজন করলে জনসচেতনতা সৃষ্টির জন্য আমরা অংশগ্রহন করব ।
উল্লেখ্য, দেশব্যাপী ঘটা করে অক্টোবর মাসকে জাতীয় স্যানিটেশন মাস হিসেবে পালন করা হয়। এ মাসে উপজেলা প্রশাসন ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উদ্যোগে বিভিন্ন প্রচার-প্রচারণা কার্যক্রম চালানো হলেও, মাঠপর্যায়ে সচেতনতা ও স্থায়ী পরিবর্তন আনতে আরও জোরালো উদ্যোগ প্রয়োজন বলে মনে করছেন স্থানীয় সচেতন মহল।
চলমান বাস্তবতায় লাখাইয়ের প্রত্যন্ত অঞ্চলে নিরাপদ ল্যাট্রিন নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি। কারণ, নিরাপদ ল্যাট্রিন ব্যবহার শুধু পরিচ্ছন্নতা নয়, এটি একটি পরিবারের সুস্থ ও মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপনের ভিত্তি। তাই লাখাইয়ের প্রত্যন্ত অঞ্চলে নিরাপদ স্যানিটেশন নিশ্চিত করতে সরকারি সহায়তার পাশাপাশি সামাজিক উদ্যোগও জরুরি হয়ে পড়েছে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Suprobhat Michigan

সানি চন্দ্র বিশ্বাস :