গত ১২ নভেম্বর অ্যান আরবারের ইউনিভার্সিটি অব মিশিগানের মেডিকেল ক্যাম্পাসে নতুন ডি. ড্যান এবং বেটি কান হেলথ কেয়ার প্যাভিলিয়ন উন্মুক্ত করা হয়েছে। ১২ তলা বিশিষ্ট এই হাসপাতাল প্রায় ৬,৯০,০০০ বর্গফুট আয়তনের। হাসপাতালে রয়েছে ২০টি অত্যাধুনিক অস্ত্রোপচার কক্ষ এবং ২৬৪টি রোগী শয্যা, যা নিবিড় পরিচর্যার জন্য উপযোগী/David Guralnick, Detroit News
অ্যান আরবার, ১৪ নভেম্বর : মিশিগান মেডিসিনের নতুনতম স্বাস্থ্যসুবিধা, কার্যকারিতা ও ভবিষ্যৎ বৃদ্ধির দিক মাথায় রেখে নকশা করা ডি. ড্যান ও বেটি কান হেলথ কেয়ার প্যাভিলিয়ন চলতি বছরের শেষ নাগাদ রোগী গ্রহণ শুরু করবে বলে বুধবার জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ব্যবস্থার কর্মকর্তারা। পূর্ব অ্যান স্ট্রিটে অবস্থিত, প্রায় ৬৯০,০০০ বর্গফুট আয়তনের ১২ তলা বিশিষ্ট এই বিশাল ভবনের অভ্যন্তর উন্মুক্ত প্রদর্শনের মাধ্যমে প্রথমবার জনসাধারণ ও গণমাধ্যমকে দেখানো হয়।
প্যাভিলিয়নে নিউরোলজি, নিউরোসার্জারি, ওটোল্যারিংগোলজি, ওরাল ম্যাক্সিলোফেসিয়াল সার্জারি, মেরুদণ্ড, কার্ডিওভাসকুলার মেডিসিন, কার্ডিয়াক সার্জারি, ভাস্কুলার সার্জারি ও থোরাসিক সার্জারি এসব ক্ষেত্রে উচ্চ-স্তরের বিশেষায়িত চিকিৎসা প্রদান করা হবে।
তবে আধুনিক চিকিৎসার পাশাপাশি এখানে রোগী ও পরিবারের আরামের দিকেও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি কক্ষে দর্শনার্থীদের জন্য আরামদায়ক পালঙ্ক, সহজে চলাচলযোগ্য ও স্পষ্টভাবে চিহ্নিত করিডোর, এবং প্রশস্ত জানালা রয়েছে, যেখান থেকে দেখা যায় বিগ হাউস বা ইউনিভার্সিটি অব মিশিগানের ক্যাম্পাসের দৃশ্য।
মিশিগান মেডিসিনের ক্রমাগত উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ নিকো বার্নেল বলেন, “অন্যান্য হাসপাতালের বেসমেন্টে যে স্থানগুলো সাধারণত থাকে, এখানে সেগুলো মেঝের উচ্চস্থানে রাখা হয়েছে, যাতে বড় জানালা দিয়ে প্রাকৃতিক আলো প্রবেশ করতে পারে।”
স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানান, রোগীর সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় আরও বৃহৎ পরিসরে চিকিৎসা দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা থেকেই এই প্যাভিলিয়নের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল।
মিশিগান মেডিসিনের সিইও ড. ডেভিড মিলার বলেন, “এই সুবিধা আমাদের আরও জটিল রোগীদের সেবা দেওয়ার সুযোগ করে দেবে। আমরা এজন্য কৃতজ্ঞ এবং সত্যিই উত্তেজিত।”
এই প্রকল্পের পরিকল্পনা শুরু হয় ১০ বছরেরও বেশি আগে। মহামারীর ঠিক আগে নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল, যা ২০২১ সালের বসন্তে পুনরায় চালু হয়।
পরিকল্পনা দল কেবল বর্তমান চিকিৎসা প্রয়োজনের কথা নয়, ভবিষ্যতের প্রযুক্তিগত অগ্রগতির কথাও মাথায় রেখেছে। উদাহরণস্বরূপ, এখানে প্রতিটি অপারেটিং রুমের আয়তন প্রায় ৭৫০ বর্গফুট, যা বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের প্রচলিত ৫৩০ বর্গফুটের তুলনায় অনেক বড়। এতে ভবিষ্যতের বড় সরঞ্জাম ব্যবহারের সম্ভাবনাও যুক্ত হয়েছে।
সহযোগী প্রধান নার্সিং অফিসার রেনে প্রিন্স বলেন, “ছোট পরিসরে কাজ করা কঠিন— চলাচল ও জীবাণুমুক্ত পরিবেশ রক্ষা করা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। বড় জায়গা এই সমস্যা কমাবে।”
ড. মিলার আরও জানান, “আমরা এখনও কিছু সূক্ষ্ম বিষয় চূড়ান্ত করছি, তবে প্যাভিলিয়ন বছরের শেষ নাগাদ রোগী ভর্তি শুরু করবে— এটা নিশ্চিত।”
প্রায় ৯৫০ মিলিয়ন ডলারের এই প্রকল্পে শেষ পর্যন্ত প্রায় ১,০০০ কর্মী থাকবেন। তাঁদের অনেকেই ইতিমধ্যে নিয়োগপ্রাপ্ত, প্রশিক্ষিত এবং সুবিধাটিতে কাজও করছেন, যাতে উদ্বোধনের দিন থেকেই পুরো ব্যবস্থা প্রস্তুত থাকে বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নার্স নির্বাহী জুলি ইশাক।
ডেট্রয়েটের প্রয়াত সমাজসেবক ড্যান ও বেটি কান মিশিগান মেডিসিনকে ৫০ মিলিয়ন ডলার দান করেছিলেন, যা প্রতিষ্ঠানের ইতিহাসে অন্যতম বৃহৎ অনুদান। তাঁদের সম্মানেই এই প্যাভিলিয়নের নামকরণ।
এতে থাকবে ২৬৪টি ব্যক্তিগত কক্ষ, প্রতিটি নিবিড় পরিচর্যার উপযোগী, পাশাপাশি ২০টি অত্যাধুনিক অপারেটিং রুম, একটি ইন্ট্রাঅপারেটিভ এমআরআই, এবং তিনটি ইন্টারভেনশনাল রেডিওলজি স্যুট।
জুলি ইশাক বলেন, “আমাদের যত্ন দলের জন্য এখানে সবকিছু একত্রে— একজন রোগীর যত্ন নিতে যা প্রয়োজন, সবকিছু হাতের নাগালেই।”
প্যাভিলিয়নের কেন্দ্রীয় ফোকাস নিউরোসায়েন্স সেবা। এতে রয়েছে একটি ২৪-শয্যার নিউরোক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট, একটি স্ট্রোক ইউনিট যেখানে ১০০-ফুট গাইট ও ভারসাম্য পরিমাপ ব্যবস্থা রয়েছে, এবং মৃগীরোগ পর্যবেক্ষণ ইউনিট যেখানে EEG দ্বারা মস্তিষ্কের কার্যকলাপ ক্রমাগত পর্যবেক্ষণ সম্ভব।
ইশাক শেষে বলেন, “এটি শুধু একটি সুন্দর ভবন নয়; এটি এমন একটি জায়গা, যেখানে দলের সদস্যরা সর্বোত্তমভাবে কাজ করতে পারবেন।”
Source & Photo: http://detroitnews.com
নিউজটি আপডেট করেছেন : Suprobhat Michigan

সুপ্রভাত মিশিগান ডেস্ক :