রবিবার, মে ১৯, ২০২৪

দেবীর বিদায়ে মিশিগান কালিবাড়ির ভক্তরা সিঁদুর খেলায় মেতেছেন

  • নিজস্ব প্রতিবেদক :
image

ওয়ারেন, ১০ অক্টোবর : সিঁদুর খেলার মধ্য দিয়ে গতকাল রাতে মিশিগান কালীবাড়ির ভক্তরা বিদায় জানিয়েছেন দূর্গতিনাশিনি দেবী দুর্গাকে। দেবীকে বিদায় জানাতে নেচে গেয়ে মাতোয়ারা হন ভক্তরা। সেজেছিলেন উৎসবের বর্ণিল রঙে। 

সকাল থেকেই  মিশিগান কালীবাড়িতে ভক্তরা  ভিড় জমাতে শুরু করেন। পূজা-অর্চনার পর দুপুরে অঞ্জলি প্রদান করেন তাঁরা। প্রসাদ গ্রহণের পর শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন রাজিব দত্ত, পূর্বা রায়, অরুদ্র রূপাই, আনুস্কা মন্ডল, আনন্দ মন্ডল, মিনাক্ষী দেবনাথ, সৌরভ, সঙ্গীতা বড়ুয়া, পিউলি চক্রবর্তী,  অদ্রিজা চক্রবর্তী, হৃষি দাশ, অনামিকা রায়, মুনমুন দাশ। 

কবিতা পাঠ করেন জনা দাশ। একক নৃত্য পরিবেশন করেন বৃন্তি, আরশিয়া কুন্ডু, টুইঙ্কল দেবনাথ, অরোরা ঘোষ।  গ্রুপ সঙ্গীত পরিবেশন করেন অনামিকা রায়, মুনমুন দাশ, মিনাক্ষী নাথ, চন্দনা দেব, কনকলতা রায় এবং মুক্তি রায়। 


রাত সাড়ে ৭টায় অনুষ্ঠিত হয় আকর্ষনীয় ধুনচি নৃত্য। রাত সাড়ে  ৮টায় প্রশস্তি বন্ধন শেষে মন্দিরের ভক্তরা মেতে উঠেন বিদায়ের সিঁদুর খেলায়। 


রাত ৯টায় মা দুর্গার উদ্দেশে সিঁদুর অর্পণ অনুষ্ঠানে ছিল দীর্ঘ লাইন। বিবাহিত মহিলারা একে একে  পান, মিষ্টি, সিঁদুর নিয়ে দেবীকে নিবেদন করেন। বিদায়ের আগে দেবীর মুখ পানপাতা দিয়ে মুছিয়ে দেন। পরম ভক্তি নিয়ে নিজ নিজ মনের বাসনা জানিয়ে দেবীর পায়ে সিঁদুর ছোঁয়ান তারা। 


দেবীর পায়ে সিঁদুর ছোঁয়ানোর পর সেই সিঁদুর প্রথমে সিঁথিতে মাখান, পরে একে অন্যের সিঁথি ও মুখে মাখেন। মুখ রঙিন করে হাসিমুখে দেবীকে বিদায় জানান। সেই খেলায় মেতে উঠেন সব বয়সের মানুষ। 

দুর্গাপুজোয় সিঁদুর খেলার প্রথা বহু শতাব্দী ধরে চলে আসছে। এই উৎসবের ইতিহাস প্রায় ৪৫০ বছরের পুরনো। সবশেষে  ধামাইল নৃত্যের পর সকলকে বিজয়ার মিষ্টমুখ করানো হয়।

দশমী মানেই বিষন্নতা, একরাশ মন খারাপ। এইদিনটিই উমার সাথে শেষ। আবার দীর্ঘ এক বছরের অপেক্ষা। কয়েকটা দিনের আনন্দ, উচ্ছ্বাস, ছুটি, আড্ডা সবকিছুকে বিদায় জানানোর পালা। সবাইকে আবার ফিরতে হবে ইঁদুর দৌড়ের কর্মব্যস্ততায়। পুজো শেষ হলেও এই দিন থেকেই আরও একবছরের অপেক্ষার শুরু। দিন গোনার শুরু। আশার সূত্রপাত হয় এই দিনই ‘আসছে বছর আবার হবে’।


গত ২৫ সেপ্টেম্বর দেবী দুর্গার আবাহন বা মহালয়ার মধ্য দিয়ে শুরু হয় দেবী পক্ষের। আর মহাষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে ১ অক্টোবর শুরু হয় শারদীয় দুর্গাপূজা। এরপর একে একে ষষ্ঠী থেকে দশমী। সবগুলো তিথিতেই মিশিগানের পূজামণ্ডপগুলো ছিলো পূজারীদের বিনম্র প্রার্থণা আর নানান আনুষ্ঠানিকতায় পরিপূর্ণ।

এদিকে গত ৫ অক্টোবর বুধবার দুর্গোৎসবের শেষ দিন ছিল ওয়ার্কিং ডে। ওয়ার্কিং ডে এর কারণে মিশিগান কালীবাড়ী এবং ডেট্রয়েট দুর্গা টেম্পলে  শারদীয় দুর্গোৎসবের বিজয়া দশমী গতকাল রাতে পালন করা হয়েছে। 


এ জাতীয় আরো খবর