সোমবার, মে ৬, ২০২৪

বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা : মেসির হাতে স্বপ্নের শিরোপা

  • সুপ্রভাত মিশিগান ডেস্ক :
image

ছবি : ফিফা ওয়ার্ল্ড কাপ, ফেসবুক পেইজ

দোহা, ১৮ ডিসেম্বর : ফ্রান্সকে টাইব্রেকারে ৪-২ গোলে হারিয়ে বিশ্বকাপ জিতল আর্জেন্টিনা। দোহার লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়ামে আজ আর্জেন্টিনা-ফ্রান্স ম্যাচ প্রতি মুহূর্তে মুহূর্তে রোমাঞ্চ ছড়িয়েছিল। ১২০ মিনিটে ম্যাচ শেষ হয় ৩-৩ সমতায়। এরপর গড়ায় টাইব্রেকারে।  টাইব্রেকারে আর্জেন্টিনার হয়ে গোল করেন মেসি, ডিবালা, পারেদেজ এবং মন্টিয়েল। ফ্রান্সের পক্ষে গোল করেন এমবাপে এবং কোলোমুয়ানি।  টাইব্রেকারে ৪-২ গোলে ফ্রান্সকে পরাস্ত করে স্বপ্নের সোনালী কাপ ছিনিয়ে নেয় আর্জেন্টিনা।
ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণে যায় আর্জেন্টিনা। ম্যাচের তৃতীয় মিনিটে বা প্রান্ত থেকে ক্রস করেন ডি মারিয়া। সেখান বল পেয়ে পাস দিলে না নিজের দখলে নেন ফ্রান্সের গোলরক্ষক হুগো লরিস। ম্যাচের ৫ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে শট করেন ম্যাক অ্যালিস্টার। তবে তা আটকে দেন হুগো লরিস। এরপর ম্যাচের ৮ মিনিটে ডি বক্সের বাইরে থেকে শট করেন ডি পল। তবে ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে প্রতিহত হলে কর্নার পায় আর্জেন্টিনা। তবে তা কাজে লাগাতে পারেনি তারা।
ম্যাচের ১৩ মিনিটে প্রথম আক্রমণে ওঠে ফ্রান্স। তবে বল নিজের দখলে নিয়ে ক্লিয়ার করে দেন গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। ম্যাচের ১৯ মিনিটে বাম দিকে ডি বক্সের বাইরে থেকে ফ্রি কিক পায় ফ্রান্স। সেখান থেকে অ্যান্তোনিও গ্রিজম্যানের নেওয়া ফ্রি কিক থেকে হেড করেন অলিভিয়ের জিরুদ। তবে তা অল্পের জন্য চলে যায় ক্রসবারের ওপর দিয়ে।
ম্যাচের ২১ মিনিটে ডি বক্সের ভেতর ডি মারিয়াকে ফাউল করলে পেনাল্টি পায় আর্জেন্টিনা। সেখান থেকে গোল করে আর্জেন্টিনাকে এগিয়ে দেন লিওনেল মেসি। ম্যাচে পিছিয়ে পড়ে আক্রমণে যায় ফ্রান্স। ম্যাচের ২৬ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে ফ্রি কিক পায় ফ্রান্স। তবে তা থেকে গোল করতে ব্যর্থ হয় তারা।
ম্যাচের ৩৬ মিনিটে ফের গোলের দেখা পায় আর্জেন্টিনা। কাউন্টার অ্যাটাক থেকে ডান দিক থেকে পাস দেন ম্যাক অ্যালিস্টার। সেখান দারুণ ফিনিশিংয়ে বল ফ্রান্সের জালে জড়ান ডি মারিয়া। তার গোলে ম্যাচে ২-০ গোলের লিড পায় আর্জেন্টিনা। এরপর ম্যাচের ৪৩ মিনিটে আক্রমণে যায় আর্জেন্টিনা। তবে তা থেকে গোল করতে ব্যর্থ হয় তারা। ম্যাচের ৪৫ মিনিটে আক্রমণে যায় ফ্রান্স। তবে তা ক্লিয়ার করে দেয় ডিফেন্ডাররা। এরপর বেশকিছু আক্রমণ করেও গোল করতে ব্যর্থ হয় দু’দল। শেষ পর্যন্ত আর কোন গোল না হলে ২-০ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় আর্জেন্টিনা।
বিরতি থেকে ফিরেই আক্রমণে যায় আর্জেন্টিনা। তবে তা রুখে দেন হুগো লরিস। ম্যাচের ৪৯ মিনিটে বা  দিকে থেকে ডি মারিয়ার পাস থেকে ভলি করেন ডি পল। তবে তা আবারও রুখে দেন হুগো লরিস। এরপর ম্যাচের ৫৩ মিনিটে কর্নার পায় আর্জেন্টিনা। তবে তা কাজে লাগাতে পারেনি তারা। ম্যাচের ৫৫ মিনিটে ডি পলকে ফাউল করার কারণে হলুদ কার্ড দেখেন আদ্রিয়েন র‌্যাবিওট। ম্যাচের ৬০ মিনিটে বক্সের ভেতর থেকে শট করেন মেসি। তবে তা চলে যায় পোস্টের বাইরে দিয়ে। ম্যাচের গোলের সুযোগ পায় আর্জেন্টিনা। তবে বেড়িয়ে এসে ক্লিয়ার করে দেন হুগো লরিস।
এরপর ম্যাচের ৭৮ মিনিটে আক্রমণে যায় আর্জেন্টিনা। তবে তা থেকে গোল করতে ব্যর্থ হয় তারা। এরপর ম্যাচের ৭৯ মিনিটে কোলো মোনিকে বক্সে ফাউল করার কারণে পেনাল্টি পায় ফ্রান্স। পেনাল্টি থেকে গোল করেন এমবাপ্পে। তার গোলে ম্যাচে ব্যবধান কমায় ফ্রান্স। এরপর ম্যাচের ৮২ মিনিটে ফের গোলের দেখা পায় ফ্রান্স। কোম্যানের পাস থেকে দুর্দান্ত শটে বল আবারও জালে জড়ান এমবাপ্পে। তার জোড়া গোলে ম্যাচে সমতা আনে ফ্রান্স। এমবাপ্পের গোল সংখ্যা দাঁড়ায় ৭। এরপর একাধিক চেষ্টা করেও গোল করতে ব্যর্থ হয় দু’দল। শেষ পর্যন্ত আর কোন গোল না হলে অতিরিক্ত সময়ে গড়ায় ফাইনাল ম্যাচ। অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে নেমেই আর্জেন্টিনাকে আরেকবার এগিয়ে দেন লিওনেল মেসি। ম্যাচের ১০৮ মিনিটের মাথায় আর্জেন্টিনাকে ৩-২ গোলে লিড এনে দেয় লিওনেল। খেলার ১১৮ মিনিটের মাথায় ফের সমতা ফেরান এমবাপ্পে। পেনাল্টি থেকে জালে জড়িয়ে হ্যাট্রিক করেন তিনি। এবার খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে।  ১৯৮৬ সালে মারাদোনার হাত ধরে বিশ্বকাপ জিতেছিল আর্জেন্টিয়ানরা। এরপর দীর্ঘ ৩৬ বছরের অপেক্ষার পর স্বপ্নের জয়ে  উল্লাসে মেতেছে গোটা দেশ।


এ জাতীয় আরো খবর