রবিবার, মে ১৯, ২০২৪

আন্তর্জাতিক নারী দিবস আজ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক :
image

ঢাকা, ০৮ মার্চ : আজ ৮ মার্চ। আন্তর্জাতিক নারী দিবস। নারী অধিকার রক্ষায় বিশ্বব্যাপি সমতাভিত্তিক সমাজ-রাষ্ট্র গড়ার লক্ষ্যে প্রতিবছর এ দিনে দিবসটি উদযাপন করা হয়। জাতিসংঘ ২০২২ সালের নারী দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করেছে ‘নারীর সুস্বাস্থ্য ও জাগরণ’। এ মূল প্রতিপাদ্যের আলোকে নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবছর আন্তর্জাতিক নারী দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করেছে- ‘টেকসই আগামীর জন্য, জেন্ডার সমতাই আজ অগ্রগণ্য’। প্রতিবছর এই বিশেষ দিবসে লিঙ্গ বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সমর্থনে এবং প্রত্যেক নারীর অধিকারকে সম্মান জানিয়ে বিশ্বজুড়ে পালন করা হয় এই নারী দিবস।

আন্তর্জাতিক নারী দিবসের ইতিহাস
সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে নারীর অর্জন উদযাপনের পাশাপাশি সমাজে নারী-পুরুষের সমতার বিষয়টি প্রতিবছর মনে করিয়ে দেয় আন্তর্জাতিক নারী দিবস। এর সূচনা সেই ১৬২ বছর আগে। ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে মজুরি বৈষম্য, নির্দিষ্ট কর্মঘণ্টা ঠিক করা ও কাজের অমানবিক পরিবেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে রাস্তায় নেমে সরকারি বাহিনীর নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন সুতা কারখানার নারী শ্রমিকরা।
পরে ১৯০৮ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি নিউইয়র্কে জার্মান সমাজতান্ত্রিক নেত্রী ক্লারা জেটকিনের নেতৃত্বে প্রথম আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ১৯১০ সালে ১৭টি দেশের ১০০ জন নারী প্রতিনিধির অংশগ্রহণে ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন।  ১৯১৪ সাল থেকে বেশ কয়েকটি দেশে ৮ মার্চ পালিত হতে শুরু করে। এরপর জাতিসংঘ ১৯৭৫ সালে ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রদান করে হয়। সেই থেকেই ধীরে ধীরে ৮ মার্চ দিবসটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নারী অধিকারের প্রতীকে পরিণত হয়। অনেক দেশই সরকারিভাবে স্বীকৃতি দেয় দিবসটিকে। অনেক দেশেই এই দিনটি নারীদের জন্য রাষ্ট্রীয় ছুটি হিসেবে পালন করে থাকে।
দিবসটি উপলক্ষে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সারাদেশে শোভাযাত্রা, আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। এছাড়াও সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন নানা আয়োজনের মধ্যে দিয়ে দিবসটি উদযাপন করবে। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
আন্তর্জাতিক নারী দিবস ২০২২ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব নারীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন। ‘টেকসই আগামীর জন্য, জেন্ডার সমতাই আজ অগ্রগণ্য’ দিবসের এ প্রতিপাদ্যটিকে বর্তমান প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত সময়োপযোগী উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ১৯(৩) অনুচ্ছেদে জাতীয় জীবনের সর্বস্তরে নারীদের অংশ নেওয়া ও সুযোগের সমতা রাষ্ট্র থেকে নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে।নারীদের যথার্থ মর্যাদা প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি অর্থনৈতিক, সামাজিক, প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে সরকার নারী শিক্ষার বিস্তার, নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা, নারীর ক্ষমতায়নসহ নারীর প্রতি সব ধরনের সহিংসতা প্রতিরোধে ব্যাপক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে।
রাষ্ট্রপতি দেশের উন্নয়নকে টেকসই করতে নারী পুরুষ নির্বিশেষে সবাইকে সহযাত্রী হিসেবে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, তার আশা একটি সুখী, সমৃদ্ধ ও গণতান্ত্রিক বিশ্ব গড়ার কাজে পুরুষের মতো সমান অবদান রাখার প্রত্যয় নিয়ে নারীর এগিয়ে চলা আগামীতে আরও বেগবান হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে পৃথক এক বাণীতে বিশ্বের সব নারীর প্রতি শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, নারী তার মেধা ও শ্রম দিয়ে যুগে যুগে সভ্যতার সব অগ্রগতি ও উন্নয়নে সমঅংশীদারত্ব নিশ্চিত করেছে। বিশ্বে তাই আজ বদলে গেছে নারীর প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি। এখন নারীর কাজের মূল্যায়ন হচ্ছে, বৃদ্ধি পাচ্ছে স্বীকৃতি।
তিনি বলেন, এদেশের নারী-পরুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় যেমন আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি, তেমনিভাবে ২০৪১ সালের মধ্যে জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলাও সম্ভব হবে।


এ জাতীয় আরো খবর