সিলেট, ১৩ মে : বৃটেনের ওরথিং বারা কাউন্সিলের ক্যাসল ওয়ার্ড থেকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন সিলেটের চৌধুরী ইবশা আহমদ। তিনি দীর্ঘদিন ধরে দেশে-বিদেশে সুনামের সাথে বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক অঙ্গ সংগঠনের দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
ইবশা চৌধুরীর পিতা মরহুম মোঃ গোলাম রব্বানী চৌধুরী (আমোদ মিয়া) ছিলেন ঐতিহাসিক রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান। তিনি সিলেট সদর আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা ও বিশিষ্ট সমাজ সেবক, ৬নং টুকেরবাজার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে অংশগ্রহণ করেন। তাঁর স্বপ্ন ছিলো জনপ্রতিনিধি হওয়ার কিন্তু সেই স্বপ্ন নিজের কাছে বাস্তবায়িত না হলেও আজ ধরা দিয়েছে সাফল্য।
বিদেশের মাটিতে তাঁরই সুযোগ্য সন্তান জনপ্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন লড়াই করে। এর চেয়ে বড় স্বপ্ন পূরণ আর কি হতে পারে? তাও আবার অনেক ইতিহাস রচনা করেছেন বৃটেনের মাটিতে। আজ ইবশা চৌধুরীর বাবা মরহুম মোঃ গোলাম রব্বানি চৌধুরী (আমোদ মিয়া) বেঁচে থাকলে নিশ্চয়ই তৃপ্তির আতিশয্যে নিজের স্বপ্ন ছেলে যে বাস্তবায়ন করেছেন তাতে হয়তো খুশিতে আত্মহারা হয়ে তার উজ্জল চেহারাটি গোলাপি বর্ণ ধারণ করতো।
মরহুম মোঃ গোলাম রব্বানী চৌধুরী (আমোদ মিয়া'র) চাচা ও কাউন্সিলর ইবশা চৌধুরী'র দাদা ছিলেন হবিগঞ্জ ১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জননেতা ইসমত আহমদ চৌধুরী এমপি। গোলাম রব্বানী চৌধুরীর দ্বিতীয় সন্তান গোলাম সারওয়ার চৌধুরী জাফরি মালদ্বীপের স্বনামধন্য ইন্দিরা গান্ধী মেমোরিয়াল হসপিটালে ডাক্তার হিসেবে কর্তব্যরত আছেন। তৃতীয় সন্তান গোলাম রাসুল জাভেদ চৌধুরী আইন বিষয়ে পড়াশোনা সম্পন্ন করেছেন এবং কনিষ্ঠ পুত্র গোলাম মাহমুদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে গ্রাফিক্স ডিজাইনার হিসেবে কর্মরত আছেন।
শৈশব থেকে স্কুলের ফাস্টবয় ইবশার চোখে উজ্জল ভবিষ্যতের ইমেজ দেখতেন বলে উল্লেখ করেছেন সিলেট প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, একাত্তর টেলিভিশন এর সিলেট বুরো চিফ ইকবাল মাহমুদ। তিনি আরো বলেন, ছোটবলা থেকে পড়াশুনা, খেলাধুলা সবখানেই ইবশার সাফল্য ছিল ঈর্ষণ্বীয়। ছোটবেলাকার সেই চটপটে, দূরন্ত, মেধাবী ইবশা আজ বিলেতে ইতিহাসের এক নতুন অধ্যায়ের নির্মাতা।
ইবশা চৌধুরীর পিতৃ নিবাস টুকেরবাজার ইউনিয়নের খুররমখলা গ্রামে। ইবশা চৌধুরীর এমন বীরত্ব ও সাফল্য মন্ডিত বিজয়ে উচ্চসিত এলাকাবাসী, আত্মীয়-স্বজন ও শুভাকাঙ্খীরা। ইবশা চৌধুরী সম্পর্কে এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, সকলেই তাঁর প্রশংসায় পঞ্চমুখ। এলাকার গৌরব তথা সিলেটের অহংকার বলে আবেগী কন্ঠে শুভকামনা জানান এক বৃদ্ধবয়সী প্রিয়জন।
বাবার জনপ্রতিনিধি হওয়ার স্বপ্নটা হয়তো ছেলে বুকে লালন করেছিলেন দীর্ঘদিন ধরে। তিনি বৃটেনের ওরথিং বারা কাউন্সিল এর ক্যাসল ওয়ার্ডে কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করে বিপুল ভোটের ব্যবধানে লেবার পার্টির হয়ে কাউন্সিলর নির্বাচিত হন।
তিনি লিভারাল ডেমোক্রেটস এর দলীয় প্রার্থী রজার্স রবিন থার্সটন (২৮১ ভোট) ও দ্যা কনজারভেটিভ পার্টি এর দলীয় প্রার্থী শাশাতি হাবিব (৬৫৮ ভোট) এবং গ্রিন পার্টি এর স্মিথ ক্রিসটপার (১৮৮ ভোট) এর চিরপ্রতিদ্বন্দ্বি হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেন। ১২৯৭ ভোট পেয়ে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি শাশাতি হাবিব এর চেয়ে ৬৪১ ভোট বেশি পেয়ে কাউন্সিলর নির্বাচিত হন।
তিনি বৃটেনের ক্যাসল ওয়ার্ডের নাগরিকদের খুব ভালোবাসতেন। যার ফলশ্রুতিতে তাঁর প্রতি ভোটের মাধ্যমে ভালোবাসা ও ভরসা দেখিয়েছেন জনসাধারণ।
উল্লেখ্য ইবশা চৌধুরী ক্যাসল ওয়ার্ডে লেবার পার্টির কোন প্রার্থী হিসেবে প্রথমবারের মতো এই ওয়ার্ডে লেবার পার্টি কর্তৃত্ব স্থাপন করতে সক্ষম হয়, তিনি প্রথম এই গৌরব অর্জন করেন এবং ব্রিটিশ বাঙ্গালী হিসেবে একটি মাইল ফলক রচনা করলেন। তিনি সকলের দোয়াপ্রার্থী।